সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাসকদল তৃণমূলকে চাপে ফেলতে মরিয়া বিরোধী বিজেপি। বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। তবে এদিনই জীবাণুমুক্তকরণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে নবান্ন (Nabanna)। তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ বিজেপি শিবির। বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ইস্যুতে তোপ দেগেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাতে দমদম বিমানবন্দরে নেমে সেই একই সুরে সুর মেলালেন বিজেপি যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য (Tejasvi Surya)। মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন তিনি। তেজস্বী বলেন, “মমতা দিদি ভয় পেয়েছেন, ইয়ে ডর আচ্ছা হ্যায়।”
শিল্প, কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলা-সহ একাধিক দাবিতে বিজেপির যুব মোর্চার এই নবান্ন অভিযান কর্মসূচি। যার সঙ্গে যোগ হয়েছে টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা খুনের ঘটনার ইস্যুও। সকাল ১১টায় চার জায়গা থেকে বিজেপির মিছিল শুরু হবে নবান্নের দিকে। বিজেপির রাজ্য দপ্তর থেকে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নেতৃত্বে একটি মিছিল হবে। কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল হবে হেস্টিংসে ফ্লাইওভারের নিচ থেকে। যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য নেতৃত্ব দেবেন হাওড়া ময়দান থেকে মিছিলটির। আর রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু-সহ অন্যরা সাঁতরাগাছি থেকে মিছিলটির নেতৃত্ব দেবেন। সব মিছিলের অভিমুখ হবে নবান্নের দিকে, এমনটাই বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: নবান্ন বন্ধ থাক বা অনুমতি না মিলুক, অভিযানের তীব্রতা কমবে না, হুঙ্কার সৌমিত্র খাঁর]
বিধানসভা ভোটের আগে শাসকদলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে শহরের রাজপথে ব্যাপক জমায়েত করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা যে গেরুয়া শিবির করবে তা রাজ্য নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট। ফলে নবান্ন অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কাও রয়েছে। বিজেপির নবান্ন অভিযানের মিছিল আটকাতে কলকাতা থেকে হাওড়া যাওয়ার প্রত্যেকটি রাস্তা বন্ধ করেছে পুলিশ। হাওড়া ব্রিজ ও বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার আগে রাস্তাগুলিতে ব্যারিকেড করে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি ব্যারিকেডে থাকছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ বাহিনী। জলপথে যাতে কলকাতা থেকে হাওড়ায় নবান্নের দিকে কেউ না যেতে পারেন, তার জন্য কড়া নজর রাখছে জলপুলিশ।
এদিকে, হাওড়া শহরের সাতটি জায়গাকে চিহ্নিত করে নবান্ন অভিযানের মিছিল আটকানোর জন্য ব্যারিকেড করছে হাওড়া সিটি পুলিশ। ভবানীপুর, কালীঘাট, এজেসি বোস রোড, বড়বাজারের কয়েকটি জায়গায় ব্যারিকেড করার পরিকল্পনা করা হয়েছে পুলিশের। একই সঙ্গে মহাকরণের দিকেও যাতে কোনও মিছিল না আসতে পারে, সেদিকেও রাখা হবে নজর। বেতড়, হ্যাংস্যাং মোড়, ক্যারি রোড, লক্ষ্মীনারায়ণতলা, বঙ্গবাসী মোড়, আরএনআরসি মোড় ও কাজিপাড়ার মতো এলাকায় ব্যারিকেড করছে পুলিশ। অতিরিক্ত বাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে রোবোকপ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স রাখা হচ্ছে। কয়েকটি জায়গায় থাকছে জলকামান। তিনটি বলয়ে থাকছে এই ব্যারিকেড। একইসঙ্গে ক্যামেরাতেও চলবে নজরদারি। ড্রোন উড়িয়ে সরাসরি মিছিলের ছবি কন্ট্রোল রুমে বসে দেখবেন পুলিশ কর্তারা, যাতে পরিস্থিতি বুঝে সেখান থেকেই ঘটনাস্থলে থাকা আধিকারিকের কাছেই তৎক্ষণাৎ র্নিদেশ পৌঁছে যেতে পারে। বুধবার শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধারে পড়ে থাকা পাথর ও ইট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।