ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: একদিনে শারীরিক পরিস্থিতির কোনও অবনতি হয়নি। সোমবারের পর মঙ্গলবার সকালেও একইরকম অবস্থা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর (Buddhadeb Bhattacharjee)। আর একটু সুস্থ হতেই বাড়ি যাওয়ার ‘আবদার’ জানাচ্ছেন তিনি। আলিপুরের যে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সেখানকার চিকিৎসক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে তিনি নাকি বলেছেন, ”আমাকে ছেড়ে দিন, বাড়ি যাব। আমি আমার দু’কামরার ফ্ল্যাটেই ভাল থাকব।” যদিও তাঁর এই ‘আবদারে’ তেমন সাড়া দিতে নারাজ চিকিৎসকদল। তাঁদের মতে, ৭৯ বছরের কমরেডকে এখনও পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল (Stable) বলে খবর।
গত শনিবার ফুসফুসের (Lungs) সমস্যা নিয়ে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর শরীর এতটাই খারাপ ছিল যে তড়িঘড়ি ৯ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে চিকিৎসা শুরু হয়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ (Infection) ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া শ্বাসকষ্টও ছিল। ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে (Invasive Ventilation) রেখে টানা দু’দিন লড়াই চলে। সোমবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ওইদিন বিকেলে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনা হয় তাঁকে। আপাতত রয়েছেন বাইপ্যাপ (BiPAP)সাপোর্টে। এখন অনেকটাই ভাল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, রক্তচাপ, শর্করার পরিমাণ সবই স্বাভাবিক।
[আরও পড়ুন: আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ৫ আগস্ট পথেই TMC, ৮ ঘণ্টার বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দলের]
মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকরা জানান, তিনি অক্সিজেন ছাড়া নিজেই ঘণ্টা দুয়েক শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পেরেছেন। কমেছে সিআরসি’র পরিমাণও। যা ছিল ৩০০, তা নেমে এসেছে ১২৫এ। তবে কাশি রয়েছে তাঁর। সেই কারণে এখনও রাইলস টিউবে খাওয়ানো হচ্ছে। আগেই তাঁর চেতনা ফিরেছিল। হাত নেড়ে, ইশারায় নানাভাবে নিজের কথা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। এবার সামান্য কথাও বলছেন বলে জানালেন চিকিৎসকরা। তিনি বাড়ি ফিরতে চাইছেন। বাইপ্যাপ সাপোর্ট, রাইলস টিউব – এসব খুলে ফেলতে চাইছেন বলে চিকিৎসকরা জানান। তাঁকে অনেকটা বুঝিয়ে তবে শান্ত করা হচ্ছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এও বারবার বলতে চাইছেন যে তিনি নিজের বাড়িতেই সুস্থ থাকবেন, হাসপাতালে নয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, এখনই তাঁকে ছেড়ে দিলে এই কয়েকদিন ধরে তাঁর যে লড়াই, তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।