গোবিন্দ রায়: দিল্লি হাই কোর্ট থেকে বদলি হয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আসা বিচারপতি দীনেশকুমার শর্মার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে 'না' আইনজীবীদের! তাঁদের এই সিদ্ধান্ত বদলের জন্য সংগঠনগুলিকে চিঠি লিখলেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এই গৌরবময় জায়গায় আমি ভালোবাসা, আতিথেয়তা এবং স্নেহ পেয়েছি। বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে, আপনাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য এই চিঠি লিখছি। আসুন আমরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে এই প্রতিষ্ঠানকে আরও গর্বিত করে তুলি।'
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম এই বদলির প্রস্তাব দেয়। তা জানার পরই হাই কোর্টের আইনজীবীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের কথায়, কলকাতা হাই কোর্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ড নয় যে 'দাগি' বিচারপতিকে এখানে ট্রান্সফার করা হবে। আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি কাছে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার কথা বলে।
কিন্তু কলেজিয়ামের প্রস্তাবের পর তাতে সিলমোহর দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরই আইনজীবী সংগঠনগুলি প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমকে চিঠি লিখে নবনির্বাচিত বিচারকের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি দিয়ে প্রধান বিচারপতি লিখলেন, 'আমাদের হাই কোর্ট দেশের অন্যতম পুরনো হাই কোর্ট। অন্য আদালত থেকে ট্রান্সফার হয়ে আসা বিচারপতিদের এই আদালতের আইনজীবীরা তাঁদের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে স্বাগত জানায়। আসুন প্রতিষ্ঠানের পরম্পরা এগিয়ে নিয়ে যাই।'
বিচারপতি দীনেশকুমার শর্মাকে বদলির সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত কার্যত কর্মবিরতি পালন করেন হাই কোর্টের আইনজীবীরা। বিক্ষোভকারীদের কথায়, যে বিচারপতির বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে তাঁকে কলকাতা হাই কোর্টে বদলি করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্ট ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নয়। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
আগে একাধিক অনৈতিক সিদ্ধান্তের জেরে শিরোনামে এসেছেন বিচারপতি দীনেশকুমার। অভিযোগ, এমন অনেক মামলা রয়েছে যেখান থেকে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যেতে পারে সেই সমস্ত মামলা ‘অনৈতিকভাবে’ কিংবা রস্টার পরিবর্তনের পরেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজের দায়রায় রেখে দিতেন। এর পিছনে কি আর্থিক লেনদেন ছিল? বিষয়গুলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তবে অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ‘দাগি’ বিচারপতিকে কলকাতা হাই কোর্টে বদলির সিদ্ধান্তে ক্ষুণ্ণ আইনজীবীরা।