অর্ণব আইচ: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি কাণ্ডে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা আদালতের। জেল ম্যানুয়্যাল অনুযায়ী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি খোলা হয়নি কেন? এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে এদিন প্রেসিডেন্সির জেল সুপারকে তলব করা হয়েছিল ব্যাংকশাল আদালতে (Bankshal Court)। আদালতে হাজিরা দিয়ে বিচারকের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল জেল সুপারকে।
এদিন প্রেসিডেন্সির (Presidency Jail) সুপারের বিরুদ্ধে আদালতে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনে ইডি। ইডির আইনজীবীরা দাবি করেন, গরু পাচার থেকে কয়লা পাচার, নিয়োগ দুর্নীতি সমস্ত ক্ষেত্রেই অভিযুক্তদের উনি প্রোটেকশন দিয়ে আসছেন। এর আগে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ লঙ্ঘন করায় জরিমানাও দিতে হয়েছে। ২০১৮ তে সেন্সর করেছিল রাজ্য। তার বিরুদ্ধে উনি স্যাটে গিয়েছিলেন। ডিআইজি প্রোমোশন চেয়েছিলেন। এই ব্যক্তি কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন। বিকাশ মিশ্রর মতো অভিযুক্তর ক্ষেত্রে হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশ অমান্য করেছেন। ওনার পিছনে কোনও অদৃশ্য হাত আছে। তাই এত ভুল করার পরও ওনাকে সরানো হয় না।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলকে নিশানা করতে বাসের ভুয়ো ছবি পোস্ট! চরম বিতর্কের মুখে সিপিএম]
ইডির অভিযোগ শুনে জেল সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারকও। শুরুতেই সুপারের কাছে সংশোধনাগারের রেজিস্ট্রার দেখতে চান বিচারক। বিচারক জানতে চান ঠিক কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি খোলা হয়নি? জবাবে সুপার জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) আঙুল ফোলা ছিল, আংটি খোলা যায়নি। উনি সেজন্য দরখাস্তও করেছিলেন। সুপারের জবাব শুনে বিচারক জানতে চান, জেলে কী এই ধরনের কোনও নিয়ম আছে কী? জেল কোডে কি এমন দরখাস্ত দেওয়া আইনসম্মত? থতমত খেয়ে সুপার জানান, না এমন নেই। (আংটি) খোলার চেষ্টা করা হয়েছিল।”
[আরও পড়ুন: ‘মন কি বাতে’র শততম পর্ব সম্প্রচার বাধ্যতামূলক, কমিউনিটি রেডিও স্টেশনগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের!]
তাতে আরও রেগে যান বিচারক। প্রশ্ন করেন, তাহলে কেন নিলেন? জবাবে সুপার বলেন, “খোলার সময় আঙুল ছড়ে গেছে। স্কিনের ক্ষতি হোক আমরা চাইনি।” সুপারের সাফাই শুনেই ক্ষুব্ধ বিচারক বলেন, “এটা ভাববেন না যে আপনারা যে দেখাচ্ছেন তাই আমরা শুধু দেখছি। আমরা পুরোটাই দেখতে পাই। সাবধান হোন। যেটা ৯ মাসে খোলা গেল না, সেটা ৯ দিনে খুলে গেল? আপনি নিজেকে ‘জেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ মনে করছেন? আপনি আইনের ব্যাখ্যা নিজের মতও করে ফেলছেন।” ঠিক কী কারণে পার্থর আংটি খোলা যায়নি, তার লিখিত ব্যাখ্যাও চান বিচারক। তীব্র ভর্ৎসনার মুখে শেষে জেল সুপার জানান, তিনি তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।