shono
Advertisement
Cyber Fraud

বিদেশে চাকরির টোপ দিয়ে ‘সাইবার দাস’ তৈরি! যুবসমাজকে সতর্ক করলেন গোয়েন্দারা

সদ্য মায়ানমার ও থাইল‌্যান্ডে এই চক্রের হদিশ মিলেছে বলে জানায় সিবিআই।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 02:06 PM Nov 14, 2025Updated: 02:07 PM Nov 14, 2025

অর্ণব আইচ: বিদেশে চাকরির নামে ‘সাইবার দাসত্বে’র ফাঁদ। সেই ফাঁদে কোনও যুবক বা যুবতী পা দিলেই তাঁরা পরিণত হবেন ‘সাইবার দাসে’। এর আগে কম্বোডিয়ায় এই চক্রের সন্ধান মিলেছিল। এবার মায়ানমার ও থাইল‌্যান্ডে মিলেছে ‘সাইবার দাস’ বানানোর চক্রের হদিশ। এই ব‌্যাপারে এবার দেশের যুব সমাজকে সতর্ক করেছে সিবিআই। একই সঙ্গে রাজ‌্য পুলিশের পক্ষেও সতর্ক করা হচ্ছে, যাতে এই রাজ্যের কোনও চাকরিপ্রার্থীকে বিদেশে চাকরির টোপ দিয়ে ‘সাইবার দাস’ বানিয়ে রেখে দিতে পারে আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ চক্র।

Advertisement

সিবিআই ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে কম্বোডিয়ায় এই আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ চক্র সক্রিয় থাকার খবর পাওয়া গিয়েছিল। ক্রমে ওই দেশ থেকে সাইবার অপরাধীরা সরে আসে মায়ানমার ও থাইল‌্যান্ডে। বিদেশে আকর্ষণীয় চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের প্রথমেই দেশের বাইরে বের করে আনে তারা। এমনও দেখা যায় যে, কানাডা, আমেরিকা, ইউরোপের কোনও দেশ বা মধ‌্য প্রাচ্যেও মোটা টাকার চাকরির অফার দেওয়া হয়।

এর জন‌্য মূলত সোশ‌াল মিডিয়াকে ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ চক্র। অনলাইনে বিভিন্ন পদ্ধতিতেও দেওয়া হয় টোপ। এছাড়াও রয়েছে অপরাধচক্রের এজেন্টরা। এই রাজ‌্য-সহ দেশের বিভিন্ন শহর ও জেলায় ঘুরে ঘুরে ওই এজেন্টরা চাকরিপ্রার্থীদের লোভ দেখায়। বিদেশে মোটা টাকার চাকরি করতে কেউ রাজি হয়ে গেলেই চক্রের পক্ষেই পাসপোর্ট ও ভুয়া ভিসার ব‌্যবস্থা করা হয়। অন‌্য কোনও দেশে চাকরির টোপ দিলেও বিমানে করে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে আসা হয় থাইল‌্যান্ড বা মায়ানমারে। এই দুই দেশে বেশ কিছু ভুয়া কল সেন্টার তৈরি হয়েছে।

চাকরিপ্রার্থীদের বলা হয়, প্রথমে মায়ানমারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কখনও একটি ঝাঁ-চকচকে অফিসেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার পরই মোহভঙ্গ হয় চাকরিপ্রার্থীর। কারণ, তাঁদের শেষ পর্যন্ত কাজ করতে হয় ভুয়া কল সেন্টারে। রীতিমতো বন্দি করে রেখে তাঁদের পরিণত করা হয় ‘সাইবার দাস’-এ। ভুয়ো কল সেন্টারে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের সামনে লেখা থাকে স্ক্রিপ্ট। সেই অনুযায়ী ‘মনিব’দের নির্দেশমতো ‘সাইবার দাস’দের ডিজিটাল গ্রেপ্তারির ভয় দেখাতে হয়। ঋণ, লগ্নি বা ডেটিংয়ের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় কল করতে হয় ওই ‘সাইবার দাস’দের। তাঁদের কাজ সাধারণ মানুষকে রাজি করানো। তাঁদের ব‌্যাঙ্ক অ‌্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় ‘মনিব’রা। কিন্তু ‘সাইবার দাস’রা অনেক সময়ে কাজে সফল না হলে তাঁদের সহ‌্য করতে হয় অত‌্যাচার। ঘরে বন্দি করে রীতিমতো মারধর করা হয়। খেতে দেওয়া হয় না। দেওয়া হয় না জলও। একমাত্র ‘টার্গেট’ পূর্ণ করতে পারলেই জোটে খাবার। এভাবে একেকজন চাকরিপ্রার্থীকে দীর্ঘদিনের জন‌্য ‘সাইবার দাস’ হয়ে থাকতে হয়েছে বলে অভিযোগ।

সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, বিদেশে মানব পাচার করে ‘সাইবার দাস’ তৈরি করার ব‌্যাপারে একাধিক মামলার তদন্ত হয়েছে। কয়েকজন যুবককে মায়ানমার থেকে বিদেশ মন্ত্রকের মাধ‌্যমে উদ্ধারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দু’জন এজেন্টকে। এরপরই সতর্কবার্তা দিয়েছে সিবিআই। বিদেশে চাকরির সুযোগ এলে যেন চাকরিপ্রার্থীরা চাকরিদাতা সংস্থা থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত যাচাই করে নেন। প্রয়োজনে যে দেশে চাকরির জন‌্য পাঠানো হচ্ছে, সেই দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যেন যোগাযোগ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই ব‌্যাপারে রাজ্যের যুবকদেরও সোশ‌াল মিডিয়ায় সতর্ক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বিদেশে চাকরি দেওয়ার 'টোপ' দিয়ে 'সাইবার দাস' তৈরির ছক!
  • দেশের যুব সম্প্রদায়কে সতর্ক করল সিবিআই।
  • সদ্য মায়ানমার ও থাইল‌্যান্ডে চক্রের হদিশ পেয়ে চিন্তিত গোয়েন্দারা।
Advertisement