সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মরশুম বদলের সময়। শীত আগতপ্রায়। এই সময়ে এমনিতেই নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে এবছর বর্ষা চলে গেলেও রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গু উদ্বেগ বাড়ছে। এনিয়ে বার বার মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে। মুখ্যসচিব প্রতি সপ্তাহে বৈঠক করছেন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দিন পজিটিভ কেস বাড়তে থাকায় সুরাহা দূর অস্ত, নিয়ন্ত্রণ ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতির জন্য বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ের অভাবই দায়ী।
স্বাস্থ্যদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী, ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৩,২২৭। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করানোয় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ১৮১৩৩ জনের। আর বেসরকারি জায়গার পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ হয়েছেন ৫০৯৪ জন। জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে এই হার বেড়েছে অনেকটাই। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে বোঝা যাচ্ছে, এর মাঝে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে এই হার সামান্য কমেছিল। পরে তা আবারও বেড়েছে। কিন্তু নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের হারে যথেষ্ট উদ্বেগ বেড়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রায় প্রতি সপ্তাহে মুখ্যসচিব নিজে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। তাতে বার বার সমস্ত দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর মাধ্যমে কাজের কথা বলা হয়। পুরসভার নিকাশি ও বিল্ডিং বিভাগ, স্বাস্থ্যদপ্তর, মৎস্য দপ্তর হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করলে তবেই এই রোগকে বাগে আনা সম্ভব। নিকাশি বিভাগের কাজ যেমন শহরের বিভিন্ন প্রান্তের নালাগুলি পরিষ্কার রাখা, বিল্ডিং বিভাগ বিভিন্ন বড় আবাসনগুলিতে জল জমছে কি না, সেদিকে নজর রাখা। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব, নিয়মিত হাসপাতালগুলি থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখা। আবার জমা জলে ডেঙ্গুর মশার লার্ভা নিধনে গাপ্পি মাছ ছাড়ার কাজ করে থাকে মৎস্য দপ্তর। এখন প্রত্যেক দপ্তর নিজ নিজ কাজ ঠিকমতো যথাযথ সমন্বয়ের মধ্যে দিয়ে করলে তবেই পুরোপুরি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সেটাই বার বার মনে করিয়ে দেন মুখ্যসচিব। আর সমন্বয়ের কোথাও একটা ঘাটতি হচ্ছে বলেই মশাবাহিত এই রোগ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।