shono
Advertisement

মাথায় টিউমার! খুলি না খুলেই বিশেষ পদ্ধতিতে রোগীকে সুস্থ করে নজির গড়ল SSKM

বর্তমানে বিপন্মুক্ত যুবক।
Posted: 04:09 PM May 03, 2022Updated: 06:50 PM May 03, 2022

অভিরূপ দাস: শেষ চার বছরে তিরিশবার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। মাথাব্যথা ছিল নিত্যসঙ্গী। যখন তখন মাটিতে পড়ে গিয়ে দাঁতকপাটি লেগে যেত। বাড়ির লোক ভেবেছিলেন মৃগী। মোজা-জুতো শুকিয়ে একাকার কাণ্ড। লাভ হয়নি কিছুই। অবশেষে এসএসকেএম হাসপাতালে মিলল সমাধান। নাক দিয়ে তার ঢুকিয়ে সারিফুল শেখের খিঁচুনি সারাল এসএসকেএম।

Advertisement

হয়েছিল কী? চিকিৎসকরা বলছেন, খুলির মধ্যে টিউমার। তার নাগাল পাওয়া কি চাট্টিখানি কথা! খুলি খুলে থকথকে ঘিলু সরিয়ে তবে অস্ত্রোপচার। শুনেই রোগীর বাড়ির লোকেদের গা হাত পা ঠান্ডা। এহেন অস্ত্রোপচারে ঝুঁকিও মারাত্মক। তবে এবার আর সে জটিলতা নেই। পূর্ব ভারতে প্রথম নাকের ফুটো দিয়ে নল ঢুকিয়ে নিকেশ করা হচ্ছে মাথার টিউমার। এসএসকেএম হাসপাতালে নেভিগেশন মেশিনের সাহায্যে শুরু হয়েছে অত্যাধুনিক এই অস্ত্রোপচার।

[আরও পড়ুন: ইদের সকালে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের ফোন মুখ্যমন্ত্রীর, প্রতিশ্রুতি দিলেন নিয়োগের]

ইনস্টিটিউট অফ অটো রাইনো ল্যারিঙ্গোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের ডিরেক্টর ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত এবং বিভাগীয় প্রধান ডা. দেবাশিস বর্মনের তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যেই অস্ত্রোপচারের সংখ্যা একশো পার। যে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সারিফুল শেখ। বছর পঁয়ত্রিশের সারিফুল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা। ডা. সৌত্রিক কুমার জানিয়েছেন, মাথাব্যথা আর খিঁচুনি নিয়ে সারিফুল যখন এসএসকেএমে আসে তখন সে রীতিমতো দুর্বল। এমআরআই, সিটিস্ক্যানে দেখা যায় ওঁর অসুখটা আদতে পিটুইটারি ম্যাক্রোডেনোমা (Pituitary macroadenomas)। অর্থাৎ পিটুইটারি গ্ল্যান্ডে পেল্লায় এক মাংসপিণ্ড। খুলির ভেতরে, মস্তিষ্কের নিচেই থাকে এই পিটুইটারি গ্ল্যান্ড। এ অংশের নাগাল পাওয়া সহজ নয়। তবে নতুন ‘এন্ডোস্কোপিক ট্রান্সফেনোইডাল অ্যাপ্রোচ’ পদ্ধতিতে তা যেন জলভাত।

ডা. দেবাশিস ঘোষের পরিচালনায় ডা. সৌত্রিক কুমার, ডা. সায়ন হাজরা টানা ৩ ঘণ্টায় এন্ডোস্কোপিক পদ্ধতিতে নাক দিয়ে নল ঢুকিয়ে শুশ্রূষা দিয়েছেন সরিফুলকে। নেভিগেশন মেশিনে সারিফুলের সিটি স্ক্যান আর এমআরআই সিডি আপলোড করে দেওয়া হয়। এরপর সেই মেশিনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই জানিয়ে দেয় কোন পথ দিয়ে তার এগোবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে এহেন টিউমার মূলত দুই ধরনের। একটি থেকে ক্ষরণ হয়, অন্যটি থেকে হয় না। কিছু টিউমার হওয়ার ফলে অতিরিক্ত গ্রোথ হরমোন ক্ষরণ হয়। যে কারণে চল্লিশ পেরিয়েও উচ্চতা বাড়তে থাকে। আঙুল হয়ে যায় মোটা মোটা। চিকিৎসকরা বলছেন, অল্প বয়সে আচমকা শরীর ফুলে যাওয়া, কিংবা ঘনঘন মাথাব্যথা হলে এমআরআই সিটি স্ক্যান করিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।

[আরও পড়ুন:তিন বছর পর ইদের সকালে রিজওয়ানুরের বাড়িতে মমতা, কথা বললেন পরিবারের সঙ্গে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement