সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে গেল কলকাতারও। ধনকুবের নীরব মোদির মামা মেহুল চোখসির সংস্থা গীতাঞ্জলি ও নক্ষত্রর জুয়েলার্স শো রুম মিলিয়ে মোট ৬টি জায়গায় রবিবার হানা দেয় ইডি। নিউ টাউন, সল্টলেক সিটি সেন্টার-সহ আরও বেশ কিছু জায়গায় দু’টি নামী ব্র্যান্ডের গহনার দোকানে হানা দেন ইডি অফিসাররা। তবে অধিকাংশ শোরুমই খালি করা দেওয়া হয়েছে। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তালা। কড়া পুলিশি প্রহরায় শোরুমের কর্মীদের দিয়ে তালা খুলিয়ে ভিতরে ঢোকেন ইডি কর্তারা।
সবমিলিয়ে দেশের প্রায় ৪৫টি জায়গায় এদিন তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের সদস্যরা। হানা দেওয়া হয় শহরের অভিজাত ক্যামাক স্ট্রিটের গীতাঞ্জলি জেমস-এর শোরুমেও। যদিও সেখান থেকেও বিশেষ কিছুই মেলেনি। ইডি কর্তারা মনে করছেন, বেগতিক বুঝে আগেই ব্যবসা গোটানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছিলেন চোখসি। পিএনবি কেলেঙ্কারির সঙ্গে এই রাজ্যের নাম জড়িয়ে যায় শুক্রবার রাতে। দু’দফায় অভিযান চলে মেহুল চোখসির গীতাঞ্জলি জুয়েলার্সের দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের শোরুমে। শো রুম সিল করে নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার সকালে ফের তল্লাশি চালায় ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থার নোটিস মোতাবেক সকালে গীতাঞ্জলির ওই শো রুমের কর্ণধার চলে আসেন। তাঁকে কিছু কাগজপত্রে সই করিয়ে এবং কর্মীদের উপস্থিতিতে শুরু হয় তল্লাশি। বিল, রেজিস্টার খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় হার্ড ডিস্ক ও ল্যাপটপ।
[পিএনবি কিছুই নয়, নোট বাতিল আরও বড় কেলেঙ্কারি! সরব মমতা]
ইডি সূত্রে খবর, বিপুল অঙ্কের টাকা এই সংস্থায় লগ্নি করা হয়েছিল। শুধু দুর্গাপুর নয়, এ রাজ্যের আর কোথায় কোথায় গীতাঞ্জলির শো রুম এবং নীরব মোদির অফিস রয়েছে তার খোঁজ চলছে। নীরবের সংস্থা ‘ফায়ারস্টার ডায়মন্ড’ এর পাশাপাশি মেহুলের গীতাঞ্জলির আরও কিছু শো রুমের খবর মিলেছে। বেলেঘাটা, দক্ষিণ দমদম এবং সল্টলেক সিটি সেন্টারে গীতাঞ্জলির বিপণি রয়েছে। এই রাজ্য ছাড়াও পাঞ্জাবে শপার্স স্টপে, গুজরাটের আলফা ওয়ান মল-সহ সবমিলিয়ে ৪৫টি জায়গায় ইডি অধিকারিকরা তল্লাশি চালান। এছাড়াও শতাধিক ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার উপরও নজর রাখছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। পিএনবি কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে আজ সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। টুইটারে তিনি লেখেন, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। নোট বাতিলের সময় আরও অনেক বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির হয়েছে। যাবতীয় আর্থিক দুর্নীতির বীজ বপণ হয়েছে। মমতা প্রশ্ন তুলে দিলেন, কেন নোট বাতিলের আগে ও পরে বড় বড় ব্যাংকের শীর্ষকর্তাদের বদলি করা হল? কারা তাঁদের নিয়োগ করেন? তবে কি সেই সময় আরও বড় কোনও কেলেঙ্কারি হয়েছে? কোন কোন ব্যাংক এভাবে প্রতারণার শিকার? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ্যে আসার পক্ষে জোরাল সওয়াল করলেন মমতা।
The post সল্টলেক-রাজারহাটে গীতাঞ্জলির শো রুমে জোর তল্লাশি ইডির appeared first on Sangbad Pratidin.