অভিরূপ দাস: ফের অঙ্গদানের (Organ Donation) নজির শহর কলকাতায়। প্রয়াত রাজমিস্ত্রী জয়দেব মান্নার দুই কিডনি এবং হৃদযন্ত্রে প্রাণ ফিরে পাবেন তিনজন। শনিবার রাতে হাওড়ার বাসিন্দা জয়দেব মান্নার (৪৪) ব্রেন ডেথ হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে অঙ্গদানের মাধ্যমে তিনজনের দেহে বেঁচে থাকবেন তিনি।
পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন হাওড়া শ্যামপুরের বাসিন্দা জয়দেব। খিদিরপুরের একটি বাড়িতে কাজ করছিলেন। গত চার-পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে পিছল ছিল ছাদ। শুক্রবার কাজ করতে করতে আচমকাই তিনতলা থেকে পড়ে যান জয়দেব। রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাঁকে নিয়ে আসে এসএসকেএমে। চিকিৎসকরা শারীরিক পরীক্ষা করে জানান, জয়দেবের বুকে মারাত্মক চোট লেগেছে। টুকরো-টুকরো হয়ে গিয়েছে পাঁজরের হাড়। রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে বুকে। মস্তিষ্কেও জমাট বেঁধেছে রক্ত। হাসপাতালে আনার পর থেকেই সংজ্ঞাহীন ছিলেন জয়দেব। চিকিৎসকদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও জ্ঞান ফেরেনি জয়দেবের। শনিবার রাতেই জয়দেবের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসকরা জানান, আর উপায় নেই। ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: HS’এর নম্বর নিয়ে অসন্তোষ, পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তাল শ্যামবাজারের AV স্কুল]
রবিবার সকালে জয়দেবের পরিজনকে মরণোত্তর অঙ্গদান সম্পর্কে বোঝানো হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন জয়দেব। তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বল্প শিক্ষিত। কিন্তু বাড়ির ছেলে অনেকের শরীরে বেঁচে থাকবে। এমন কথা শোনা মাত্রই সম্মতি দেন তাঁরা। করোনার আবহেই সফল হল অঙ্গদান প্রক্রিয়া। ছেলে আর ফিরবে না, তবে তাঁর অঙ্গ অন্যকে বাঁচিয়ে রাখবে এটাই প্রাপ্তি বলে মনে করছে মৃত জয়দেবের পরিবার।
উল্লেখ্য, করোনা আবহে থমকে অঙ্গদানের কাজ। তবে ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে প্রক্রিয়া। আর এতেই আশার আলো দেখছে চিকিৎসকরা। জয়দেবের দু’টি কিডনি পেয়েছেন এসএসকেএমের দুই কিডন বিকল হওয়া রোগী। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ৫৮। অন্য কিডনি গ্রহীতা ২৮ বছরের তরুণী। জয়দেবের হার্ট নিয়ে আসা হয়েছে আরএন টেগোর হাসপাতালে। সেখানে ৪৩ বছর বয়সী এক রোগীর দেহে তা প্রতিস্থাপিত হবে। চাকদার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে গিয়েছিল। মৃতের লিভারের অবস্থা ভালো না-থাকায় লিভার প্রতিস্থাপন হয়নি। তবে ত্বক সংরক্ষণ করা হয়েছে। দুই চোখের কর্নিয়া সংরক্ষণ করা হয়েছে শঙ্কর নেত্রালয়ে।