অর্ণব আইচ: সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর হাত ধরেই কি কয়েকশো কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্যবসায়ী সুজয়কৃষ্ণকে দফায় দফায় জেরা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। যদিও ইডির দাবি, প্রথম থেকেই তদন্তে অসহযোগিতা করছেন সুজয়কৃষ্ণ। ইডির হেফাজতে যাওয়ার পর খেতেও চাননি তিনি। তবে ইডি সূত্রের খবর, তাঁর মেয়ে এসে বাবাকে কিছু খেতে অনুরোধ করেন। মেয়ের অনুরোধেই খাবার মুখে তোলেন সুজয়কৃষ্ণ। যেহেতু অসুস্থ স্ত্রী বাড়িতে একা, তিনি মেয়েকে স্ত্রীর খেয়ালও রাখতে বলেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই ইডির ডিরেক্টর কলকাতায় এসেছেন। তিনি নিজেও জেরা করতে পারেন সুজয়কৃষ্ণকে। এ ছাড়াও পুর দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন মামলার তদন্তকারী ও ইডির কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন তিনি। ইডির দাবি, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra) ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় মিলে নিয়োগ দুর্নীতির চতুর্ভুজ তৈরি করেন। ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কয়েকশো কোটি টাকা এই চারজনের মাধ্যমেই লেনদেন হয়েছে। এই চক্রটিকে টাকা দিয়ে বহু অযোগ্য প্রার্থী চাকরিও পেয়েছে বলে দাবি ইডির। একেকজনের কাছ থেকে পাঁচ থেকে কুড়ি লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করার পর ওই বিপুল টাকা কোন পথে লেনদেন করা হয়েছে, ইডি আধিকারিকরা নতুন করে সেই তদন্ত করছেন।
[আরও পড়ুন: অপারেশন টেবিলে ৯ মহিলা, মদ্যপ অবস্থায় মেঝেয় লুটিয়ে পড়লেন ডাক্তার! তারপর…]
ইডির কাছে খবর, কীভাবে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হবে, অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা কোন কোন জায়গায় পাঠাতে হবে, সেই পরিকল্পনা করতে সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (WBBPE) অফিসে যেতেন। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁরই নির্দেশে কুন্তল, তাপসদের হাত দিয়ে টাকা যেত। এমনকী, সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। তাঁর নির্দেশে কুন্তল পার্থকে দশ লাখ টাকা দেন। আবার অযোগ্য প্রার্থীদের পাস করানোর জন্য কুন্তল ঘোষ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কাছে যান। সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁর দেওয়া তালিকায় প্রার্থীরা যাতে চাকরি পান, তার জন্য আশ্বস্ত করেন। সেই আশ্বাসের জোরেই কুন্তল সুজয়কৃষ্ণকে ৭০ লাখ টাকা দেন। যদিও জেরার মুখে ইডি আধিকারিকদের কাছে সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেন, ওই ৭০ লাখ টাকা তিনি কুন্তলকে ফেরত দিয়েছেন। যদিও এই তথ্য যাচাই করতে হবে বলে দাবি ইডির।
[আরও পড়ুন: ভারতে চিতাদের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ নেই, সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা]
ইডির গোয়েন্দাদের মতে, সুজয়কৃষ্ণর যে তিনটি সংস্থার সন্ধান মিলেছে, সেগুলির মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সেই তথ্য যাচাই করতে ওই সংস্থাগুলির অন্য কর্মকর্তা তথা ডিরেক্টরদের তলব করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইডি।