সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার ৮৭ দিন পর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে শেষ হয়েছে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া। শিয়ালদহের জেলা ও দায়রা আদালতে সোমবার অভিযুক্ত সঞ্জয়কে পেশ করা হয়। সিবিআইয়ের চার্জশিটে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে এই সঞ্জয়েরই নাম রয়েছে। এদিন আদালত থেকে বেরনোর সময় সঞ্জয় বলে, "সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমাকে ভয় দেখাচ্ছে যে তুমি কিছু বলবে না। ডিপার্টমেন্ট আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। এটাই কি ভারতীয় সংবিধানের ন্য়ায়?” সঞ্জয়ের এই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ।
আজ এক ভিডিও বার্তায় কিঞ্জল বলেন, "আমরা আন্দোলনকারী, তদন্তকারী নই। কোর্ট মনিটরিংয়ে সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিন মাস কেটে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সঞ্জয় রায় ছাড়া কাউকে অ্যারেস্ট করা হয়নি। যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে তাতে সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারও নাম নেই। একাজ একজন করতে পারে না। সিবিআই এতদিন ধরে কী করল? সিবিআই কেন এই জিনিসটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে না? আজ সঞ্জয় বলেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। কে ফাঁসিয়েছে, কেন ফাঁসানো হচ্ছে? সেই তথ্য সিবিআইয়ের সামনে আনা উচিত।" এর পাশাপাশি ফের একবার অভয়ার ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হন তিনি।
গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অক্টোবরে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। এর পর সোমবারের শুনানিতে শিয়ালদহ আদালতে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হল। সূত্রের খবর, ১১ নভেম্বরের পর থেকে ছুটির দিন বাদে রোজ শুনানি হবে।
এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে ফের নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সঞ্জয়। তার বক্তব্য, "আমি যখন বলেছি, আমার কথা শোনেনি। আমি এতদিন চুপ ছিলাম। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার নামে সব কিছু বার হচ্ছে। আমি কিন্তু রেপ অ্যান্ড মার্ডার করিনি। আমি বললাম যে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমাকে সেখানেও যেতে দিল না। সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমাকে ভয় দেখাচ্ছে যে তুমি কিছু বলবে না। ডিপার্টমেন্ট আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি পুরোপুরি নির্দোষ।”
এর আগেও শুনানির সময় একাধিকবার সঞ্জয় বার বার দাবি করেছে, সে নির্দোষ। তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। এদিনও সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, এর নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিত মণ্ডলও এই ঘটনায় জড়িত। তাদের বিরুদ্ধেও চার্জশিট পেশ করতে চায় সিবিআই। তবে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত প্রমাণ এখনও হাতে আসেনি বলে খবর সূত্রের।