রমেন দাস: বইমেলা কি সবার? কলকাতার বই উৎসব নিয়ে এ প্রশ্ন তুলছেন ওঁরা। দাবি, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় (International Kolkata Book Fair) বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য নেই তেমন উপযুক্ত ব্যবস্থা। অভিযোগ, শৌচাগার থেকে শুরু করে বইমেলার অধিকাংশ স্টলেই প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে বিশেষভাবে সক্ষমদের। কেন?
সমাজকর্মী তথা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপিকা প্রিয়াঙ্কা দে’র দাবি, ”আমি নিজেও শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী (Specially Abled)। হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হয়। কলেজে পড়াই। কিন্তু বইমেলা গিয়ে বারবার হতাশ হতে হয়। চেষ্টা করেও বহু স্টলে ঢুকতেই পারি না।” কী অসুবিধা হয়? ওই অধ্যাপিকার অভিযোগ, ”প্রায় ২ বছর ধরে হুইলচেয়ার ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের তরফে আন্দোলন করছি। কিছু ক্ষেত্রে বড় বড় বইয়ের স্টলে র্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও বিপদ রয়েছে। র্যাম্পের (Ramp) পরেই কোলাপসিবল গেটের নিচের অংশ পেরিয়ে আমাদের জন্য বইমেলা উপভোগ করা মারাত্মক বিপদের।” প্রিয়াঙ্কাদেবীর দাবি, ”বারবার গিল্ডকে বলেছি। হয়ে যাবে বলেও আজও প্রায় ৯৯ শতাংশ স্টলে (Book Stall) আমাদের জন্য কোনও সুযোগ নেই।”
[আরও পড়ুন: ‘ফালতু যুক্তি’, মাধ্যমিকের সময় বদল নিয়ে পর্ষদকে তোপ হাই কোর্টের ]
প্রায় একই সুরে অভিযোগ বাগনান কলেজের অধ্যাপক বুবাই বাগের। তাঁর দাবি, ”আমি নিজেও বিশেষভাবে সক্ষম। কিন্তু বইমেলায় আজও প্রতিবন্ধী সহায়ক কোনও ব্যবস্থা নেই। বহু ক্ষেত্রে হুইল চেয়ার (Wheel Chair) নিয়ে যাতায়াত করা যায় না। শৌচাগার ব্যবহার করতে পারি না। আশ্চর্যের বিষয়, প্রতিবন্ধী হলে লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নেও আপনি যেতে পারবেন না। কারণ, সেখানেও র্যাম্প নেই।” বইমেলার ‘গিল্ড’ অফিসেও র্যাম্প নেই বলেই দাবি অনেকের।
যদিও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য খানিকটা সমস্যা থাকলেও বহু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই পালটা দাবি করেছেন ‘পাবলিশারস অ্যান্ড বুক সেলারস গিল্ড’ (GUILD) সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ”আমি তো দেখছি না কোথাও র্যাম্প নেই! বহু বড় স্টলে ব্যবস্থা রয়েছে। ছোট বইয়ের স্টলে তো র্যাম্পের ব্যবস্থা করা কঠিন। শৌচালয় নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। সেটাও মিটেছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন, আর একবার দেখে নিন। আসুন বইমেলায়, অসুবিধা হবে না।”