অর্ণব আইচ: ভবানীপুরের নিহত ব্যবসায়ী ভব্য লাখানির বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুঃসংবাদ পাওয়ার পরই শিলিগুড়িতে সিএএ বিরোধী মিছিল বাতিল করেন তিনি। কলকাতায় ফিরেই সোজা যান ভবানীপুরে। নিহত ব্যবসায়ীর পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “যারা এই ধরনের অপরাধ করে তারা ক্রিমিনালের থেকে বড় ক্রিমিনাল।”
ঠিক কী ঘটেছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, মঙ্গলবার ব্যবসায়ীর স্ত্রী মিসিং ডায়েরি করেন। তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে বলেই দাবি করেন। অভিযোগ পাওয়ামাত্রই শুরু হয় খোঁজখবর। নিমতার প্রবোধ মিত্র লেনের বাসিন্দা অনির্বাণ গুপ্ত নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার করে বালিগঞ্জ থানার পুলিশ। জলের ট্যাঙ্কে বস্তাবন্দি দেহ পুঁতে রাতারাতি পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের কথা স্বীকার করে অনির্বাণ। তার দাবি, দেহ লোপাটে সাহায্য করে সুমন দাস নামে এক যুবক। দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘ভাই বলে পরিচয় দেবেন না, বাবুনের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ’, বিস্ফোরক মমতা]
ভব্য লাখানি ওষুধ সরবরাহের ব্যবসা করতেন। তিনি অনির্বাণকে ৫০ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন হলেও তিনি টাকা ফেরত পাননি। সেই টাকা চাওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই খবর। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পূর্ব পরিকল্পনামাফিক ডেকে উইকেট দিয়ে মারধর করে বস্তাবন্দি দেহ জলের ট্যাঙ্কের নিচে রেখে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়। তাঁর রক্তমাখা পোশাক নিমতার ধাপায় ফেলে দেওয়া হয় বলেই খবর।
বুধবার সকালে ব্যবসায়ীর মৃত্যু সংবাদ পান মুখ্যমন্ত্রী। এর পরই শিলিগুড়িতে সিএএ বিরোধী মিছিল বাতিল করেন। সভা শেষ করেই ফিরে আসেন কলকাতায়। ভবানীপুরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে যান। কথা বলেন পরিজনদের সঙ্গে। নিহত ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মমতা বলেন, “সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। যারা এই ধরনের অপরাধ করে তারা ক্রিমিনালের থেকে বড় ক্রিমিনাল। পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে।” এই ঘটনার তড়িঘড়ি কিনারায় পুলিশকে দরাজ সার্টিফিকেটও দেন মমতা। তিনি বলেন, “পুলিশ খুব ভালো কাজ করেছে।” ব্যবসায়ীর মা, স্ত্রী এবং দুই নাবালক সন্তান রয়েছে। একজন দশম এবং অপরজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন সকলে।