ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কেন্দ্র দরকারে শান্তিবাহিনী পাঠাক বাংলাদেশে। বিধানসভা অধিবেশনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার সময় এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চাইলেন রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ। তাঁর কথায়, ''আমরা প্রস্তাব দিলাম। এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিন। রাষ্ট্রসংঘের নজরে আনা হোক বিষয়টি। কেন্দ্র রাষ্ট্রসংঘের কাছে আবেদন করুক শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর জন্য।''
সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের প্রথমার্ধ্বেই যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক বিষয় নিয়ে বিবৃতি দেন। ওঠে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও। মুখ্য়মন্ত্রী তা নিয়ে সে দেশের সঙ্গে বাংলার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ''আমাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের ওখানে সম্পত্তি আছে, পরিজন আছে। এপারে থাকে, ওপারে ছেলেমেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাঁদের অফিসিয়াল পাসপোর্ট আছে। বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে বলছি না। সেটা কেন্দ্রের বিষয়। এখানে কেন্দ্র সরকার যা করে তাই মেনে নিই। কিন্তু ১০ দিন ধরে দেখছি কেন্দ্রের সরকার চুপ করে আছে। তাদের দল বলছে, সীমান্ত আটকে দেব, খাবার পাঠাতে দেব না। কেন্দ্র একমাত্র বললে আমরা এটা করতে পারি। কোনও ধর্ম, কোনও বর্ণ-জাতি অত্যাচারিত হলে আমরা বলতেই পারি। তারা সুস্থ থাক। কিন্তু চাইব আমাদের লোকেদের উপর যাতে কোনও অত্যাচার না হয়।''
এর পর সুর চড়িয়ে তিনি নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ''আজ বিধানসভা থেকে বলছি পার্লামেন্ট চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলছি আপনারা বিবৃতি দিয়ে জানান। আর আমাদের লোকেদের ফিরিয়ে দিতে চাইলে আমরা তাদের এখানে ব্যবস্থা করে দেব। আমি খেতে পেলে তারাও পাবে। আমি ইসকনের সঙ্গে কথা বলেছি। জাতীয় পতাকার অপমান এভাবে হতে পারে না। কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছি। দরকারে ওই দেশে কেন্দ্র সরকার প্রতিনিধি পাঠাক শান্তির বার্তা নিয়ে, ধর্মীয় অধিকার পালন করার আছে। কেন্দ্র রাষ্ট্রসংঘের কাছে আবেদন করুক, শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর জন্য।'' সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাব আবেদন আকারে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে পাঠাবেন বিধানসভার স্পিকার।
ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর থেকে উত্তাল বাংলাদেশ। বেড়েছে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার। আলাদা করে টার্গেট হচ্ছেন ইসকনের সদস্যরা। এই অবস্থায় ইসকনের ৫৪ জন সদস্য রবিবার বৈধ উপায়ে বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাঁদের আটক দেয় বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ। ইসকন সদস্যদের ভারতে প্রবেশে বাধা দেওয়া নিয়ে আজব দাবি করেন বাংলাদেশ সরকারের ইমিগ্রেশন বিভাগের আধিকারিক ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভুঁইয়া। তিনি জানান, ইসকন সদস্যদের কাছে বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা থাকলেও বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ সরকারি অনুমতি ছিল না।