অর্ণব আইচ: ম্যাট্রিমনি সাইটে পরিচয়। তার পর বন্ধুত্ব, প্রেম। হবু স্ত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ব্যবসার নাম করে নাকি ভাবী স্ত্রীর কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত। অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু করে পূর্ব কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ। আহতাসাম নাদিম নামের ওই পলাতক যুবককে পূর্ব কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের শেষের দিকে একটি ম্যাট্রিমনি সাইটে বিজ্ঞাপন দেন বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা ওই তরুণী ও নাদিম নামের যুবক। সাইটের মাধ্যমেই দুজনের পরিচয় হয়। আদানপ্রদান হয় মোবাইল নম্বর। প্রথমে ফোনে শুরু হয় কথাবার্তা। এর পর দুজনের দেখা-সাক্ষাৎ শুরু হয়। অভিযোগ, নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেওয়া নাদিমের সঙ্গে ওই তরুণী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত জানুয়ারিতে নাদিম ওই তরুণীর বেনিয়াপুকুরের বাড়িতে যায়। তরুণীর অভিযোগ, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে ওই যুবক। এর পর ওই যুবক বেশ কয়েকবার তার ভাবী স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায়। জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে দুজন একসঙ্গে থাকে।
এর মধ্যেই তরুণী তাঁর হবু স্বামীকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। প্রথমে সে জানায়, তার পরিবারের লোকেরা অসুস্থ। তাই দেরি হচ্ছে। ক্রমে সে ভাবী স্ত্রীকে বলে, তার ব্যবসায় মন্দা চলছে। কিছু টাকা পেলে সে ব্যবসার ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তরুণী হবু স্বামীকে বিশ্বাস করে তাঁর বিয়ের জন্য জমানো টাকা থেকে ৭৭ হাজার টাকা অভিযুক্তর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেন। এর পর দফায় দফায় পাঁচ লক্ষ টাকা তরুণী তাঁর হবু স্বামীকে দেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরই তরুণীকে এড়িয়ে চলতে থাকে যুবক। তাঁর সঙ্গে ঝামেলাও করে। ক্রমে সে তরুণীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।
এর পরই তরুণী ওই যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করে যে হোটেলগুলিতে তরুণীকে যুবক নিয়ে গিয়েছিলেন, সেগুলিতে হানা দেন। ওই হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতা দেখে যুবকের নাম ও পরিচয়পত্রের কপি পুলিশ উদ্ধার করে। শনিবার রাতে পূর্ব কলকাতার একটি জায়গা থেকেই পুলিশ অভিযুক্ত নাদিমকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তার মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে। ওই টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।