মলয় কুণ্ডু: এসআইআরের মাঝেই ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দু'পাতার একটি চিঠি লিখেছেন তিনি। দু'টি গুরুতর বিষয় নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমটি এসআইআরের কাজে বেসরকারি বা ঠিকাকর্মী নিয়োগ নিয়ে। আর দ্বিতীয়টি বেসরকারি আবাসনে ভোটকেন্দ্র করা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের মতামত চাওয়া প্রসঙ্গে। তাঁর প্রশ্ন, এসব কার নির্দেশে করা হচ্ছে? এতে ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে বলে সতর্ক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে এসআইআরের কাজে বেসরকারি বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ নিয়ে DEO-দের নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর বক্তব্য, DEO-দের বলা হয়েছে যাতে ডাটা এন্ট্রির কাজে কোনও ঠিকা কর্মীকে কাজে লাগানো না হয়। সেক্ষেত্রে কর্মীদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে, কাজে ভুলের আশঙ্কাও থাকবে। অথচ কমিশন নিজে টেন্ডার ডেকে ১০০০ কর্মীকে একবছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের দক্ষতা কি প্রশ্নাতীত? এহেন দ্বিচারিতা কেন? এই বিষয়টি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের গোচরে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দ্বিতীয়ত, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন দপ্তর থেকে বেসরকারি আবাসনে ভোটকেন্দ্র করা যাবে কিনা, সে বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। এনিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোর বক্তব্য, সাধারণত সরকারি স্কুল বা কোনও প্রতিষ্ঠানেই ভোটকেন্দ্র হয়, জনসাধারণের প্রবেশের কথা মাথায় রেখে। বেসরকারি আবাসনে তো সকলের প্রবেশাধিকার থাকে না। তাহলে কেন তা ভাবা হচ্ছে? এসব প্রশ্ন তুলে তৃণমূল সুপ্রিমো রাজনৈতিক অভিসন্ধির ইঙ্গিত করেছেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে এই চিঠিতে তাঁর প্রশ্ন, এসব কাদের কথায় হচ্ছে? ভোটের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে কারা এভাবে বাধা দিচ্ছে? এসব প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এসআইআরের মাঝে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই চিঠি নিঃসন্দেহে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, এসআইআরের অত্যধিক কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বিএলওরা। অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। বিএলওদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে এসআইআর প্রক্রিয়া থামানোর দাবিতে এর আগে কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্বিতীয়বার চিঠি দিয়ে আরও দু'টি জরুর বিষয় তুলে ধরলেন তিনি।
