shono
Advertisement
Netaji subhas chandra bose

তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি! রেনকোজির 'চিতাভস্ম' নেতাজির, প্রমাণ কী? প্রশ্ন ‘বসু পরিবারের’

সব তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণে বসলে হলফ করে বলা যায় নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য আরও ঘনীভূত হল।
Published By: Subhankar PatraPosted: 09:27 PM May 29, 2025Updated: 10:18 PM May 29, 2025

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় যে নেতাজির মৃতু‌্য হয়নি, যে দুর্ঘটনা ঘটেইনি, যে দুর্ঘটনার খবর রটানো হয়েছিল বলে প্রমাণও মিলেছিল, সেই ভুয়া দুর্ঘটনায় প্রয়াত তথাকথিত ‘চিতাভস্ম’ নেতাজির হয় কীভাবে– প্রশ্ন তুলে সরব হল নেতাজির প্রিয় মেজো দাদা শরৎচন্দ্র বসুর বড় ছেলের পরিবার।

Advertisement

বৃহস্পতিবার প্রকাশে‌্য এসেছিলেন শরৎ বসুর বড় ছেলে অশোকনাথ বসুর দুই মেয়ে জয়ন্তী রক্ষিত, তপতী ঘোষ ও এক ছেলে আর্য বসু। এই অশোকনাথ বসু ছিলেন নেতাজির মহানিষ্ক্রমণের সময়ের অন‌্যতম সহযোদ্ধা। কোনও কোনও মহল থেকে কেন্দ্রের সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রেনকোজি মন্দির থেকে নেতাজির তথাকথিত চিতাভস্ম দেশে আনার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে বলে দাবি। তারই প্রতিবাদে এদিনের সাংবাদিক বৈঠক। পরিবারের এই অংশের দাবি, তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃতু‌্যর দাবিতে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের সীলমোহর যদি তঁার অন্তর্ধান রহস‌্য ধামাচাপা দেওয়ার প্রথম ষড়যন্ত্র হয়, তাহলে এবার ‘ভুয়া’ চিতাভস্ম আনার উদে‌্যাগ সেই পর্বের দ্বিতীয় ষড়যন্ত্র। এই নিয়ে বসু পরিবারের একাংশের দিকেই আঙুল তুলে শরৎচন্দ্র বসুর এই তিন নাতি-নাতনির জোরালো দাবি, নেতাজির মৃতু‌্য তাইহোকুর কোনও বিমান দুর্ঘটনায় হয়নি। তার একমাত্র এবং সব থেকে বড় প্রমাণ তাইওয়ান রিপোর্ট, যা ১৯৫৬ সালেই জানিয়ে দেয় তাইহোকুতে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। নেতাজির মৃতু‌্যর সাক্ষী হিসাবে সে সময় ভারত সরকার যাদের নাম জানিয়েছিল, তঁারা নেতাজির মৃতু‌্য এমনকী, বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও প্রমাণই শেষ পর্যন্ত দিতে পারেনি। এদিন ওই পরিবারের সমর্থন নিয়ে সকলের সামনে সেই তাইওয়ান রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন দুই গবেষক সৌম‌্যব্রত দাশগুপ্ত ও সৈকত নিয়োগী। এই দুজনই যৌথ উদে‌্যাগে সামনে এনেছেন তাইওয়ান রিপোর্ট। সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট লেখক বিপ্লব রায়।

শরৎ বসুর তিন নাতি-নাতনি এদিন যা যা তথ‌্য জানিয়েছেন তার বেশিরভাগই ছোটবেলায় শোনা পারিবারিক আলোচনা, ব‌্যক্তিগত কিছু বই-লেখাপত্র, নেতাজির কিছু চিঠি এবং তঁার কিছু সহযোদ্ধাদের এমন দাবির উপর দঁাড়িয়ে যারা বারবার নানা সময় প্রমাণ দিয়েছে যে, মিত্রশক্তির জয়ের পর নেতাজি বর্মা থেকে কখনও ভিয়েতনাম, কখনও চিন আবার আরও পরে রাশিয়া যান। যা বারবার নানা গবেষণায় সীলমোহরও পেয়েছে। কিন্তু স্বীকৃতি দেয়নি শুধু কংগ্রেস সরকার। ৮৮-র জয়ন্তী রক্ষিত এদিন দিলেন আরও একটি তথ‌্য, “আমার ঠাকুরদা মানে শরৎচন্দ্র বসু নেশন পত্রিকার বার করতেন। আমার তখন ১০-১১ বছর বয়স। একটা কাগজ নিয়ে একদিন বাড়িতে হইচই। তাতে দেখলাম লেখা, ‘নেতাজি ইন রেড চায়না’। সেটা ১৯৪৯ সাল। পরে জেনেছিলাম উনি রাশিয়াতেও গিয়েছিলেন। সেই সূত্রে স্টালিনের কথা বাড়িতে খুব আলোচনা হত।” তঁাদের কথাতেই উঠে আসে মথুরালিঙ্গম থেভর নামে এক রাজনীতিবিদের কথা। সেটা ১৯৫৫-৫৬ সাল। জয়ন্তীদেবী জানালেন, “এই থেভরের সঙ্গে নেতাজির যোগাযোগ ছিল জানতে পেরেই তৎকালীন সরকার আচমকা ঘোষণা করল শাহনাওয়াজ কমিটির।”

এই প্রসঙ্গেই আর্য বসু, অর্থাৎ শরৎ বসুর নাতি জানাচ্ছেন, “বিশিষ্ট বিচারপতি ডা. রাধাবিনোদ পালও সে সময় এই থেভরের কথা প্রসঙ্গে তোড়জোর শুরু করেছিলেন সিটিজেনস কমিশন বসানোর। তাই সরকারিভাবে বাড়তি উদে‌্যাগ নিয়ে শাহনাওয়াজ কমিটি তৈরি করে নেতাজির মৃতু‌্য তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় হয়েছিল বলে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার।” সব তথ‌্য নিয়ে বিশ্লেষণে বসলে হলফ করে বলা যায় নেতাজির অন্তর্ধান রহস‌্য আরও ঘনীভূত হল। কারণ লেখক বিপ্লব রায় দাবি করছেন, “১৯৬৭ সালে নেতাজি সন্ন‌্যাসীর বেশে চন্দননগরে কাটিয়েছেন অন্তত ১৫ দিন। চিকিৎসার জন‌্য।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • যে তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনা ঘটেইনি, যে খবর স্রেফ রটনা বলে প্রমাণও মিলেছিল, যে 'ভুয়ো' দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুই হয়নি, সেই 'চিতাভস্ম' নেতাজির হয় কীভাবে?
  • প্রশ্ন তুলে সরব হলেন নেতাজির প্রিয় মেজো দাদা শরৎচন্দ্র বসুর বড় ছেলের পরিবার।
  • বসু পরিবারের একাংশের দিকেই আঙুল তুলে শরৎচন্দ্র বসুর এই তিন নাতি-নাতনির জোরালো দাবি, নেতাজির মৃত্যু তাইহোকুতে কোনও বিমান দুর্ঘটনায় হয়নি।
Advertisement