shono
Advertisement
Bratya Basu

পার্থর আমলেই বদল OMR সংরক্ষণের নিয়মে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর উপর দায় চাপালেন ব্রাত্য

অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তোপ শিক্ষামন্ত্রীর।
Posted: 10:24 AM Apr 26, 2024Updated: 12:53 PM Apr 26, 2024

স্টাফ রিপোর্টার: নিয়োগ দুর্নীতির ‘মূল চক্রী’ হিসাবে ইতিমধ্যেই যিনি যাবতীয় সন্দেহের নিশানায়, আদালতের নির্দেশে এক ধাক্কায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নেপথ্যেও রাজ্যের সেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের ভূমিকাই ফের কাঠগড়ায়। আদালতের রায় অনুযায়ী, নিয়োগের পরীক্ষার উত্তরপত্র তথা ওএমআর শিটের মূল‌্যায়নে গলদ এবং সেই  ওএমআর (OMR) যথাযথভাবে সংরক্ষিত না থাকাই  নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক এবং গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি স্তরের ওই শিক্ষাকর্মীদের চাকরি খারিজের অন‌্যতম কারণ। নথি সাক্ষী, ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের ওএমআর শিট সংরক্ষণ সংক্রান্ত নতুন বিধি চালু হয় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে। সেই বিধিমাফিকই পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট মাত্র এক বছর সংরক্ষণ করার নিয়ম চালু হয়।

Advertisement

শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিলের আবহে বৃহস্পতিবার সেই বিধিকেই দুষে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) চেয়ারম‌্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “আজকে যদি আসল ওএমআর সংরক্ষিত থাকত, তাহলে বিষয়টা এতদূর গড়াতই না। এত আইনি জটিলতাও তৈরি হতো না। আলাদা করে তদন্ত করা, উদ্ধার করা, সেগুলি আইনত গ্রাহ্য কি না, এসব প্রশ্নই আসত না।” এবার অবশ‌্য ওই বিধি সংশোধনের পথে হাঁটতে চলেছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‌্য বসু এদিন জানিয়েছেন, “আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি, এখন থেকে এসএসসির যে পরীক্ষা হবে, তার ওএমআর শিট অন্ততপক্ষে ১০ বছর সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।”

[আরও পড়ুন: ভোটের বাংলায় বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগে সরব গেরুয়া শিবির]

আদালতের রায়ে যে সুপার নিউমেরিক পদ বা অতিরিক্ত শূন‌্য পদে নিয়োগকে অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায়ই দ্বিচারিতা করেছেন বলে এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‌্য বসু সরব হন। তিনি বলেন, "মন্ত্রিসভার অনুমোদনে তৈরি অতিরিক্ত শূন্যপদগুলি থেকে রাজ্য সরকার একটি চাকরিও দেয়নি। ব্রাত‌্য বলেন, রাজ্য সরকারের তৈরি অতিরিক্ত শূন্যপদ থেকেই একজন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের (Calcutta High Court) তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অথচ, তিনিই অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।" তাঁর কথায়, ‘‘তৎকালীন বিচারপতি ও বর্তমানে বিজেপির তমলুক কেন্দ্রের প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) নির্দেশেই মাত্র একজনকে অতিরিক্ত শূন্যপদ থেকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। রায়ে তিনি খুব পরিষ্কার করে বলেছিলেন, অতিরিক্ত শূন্যপদ থেকে একটি চাকরি একজন প্রার্থীকে দেওয়া হোক।’’ আদালতের রায়ে এখন সেই অতিরিক্ত শূন‌্যপদে নিয়োগই অনৈতিক বলে চিহ্নিত হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ন, “যদি এটা অনৈতিক, আড়াল করার চেষ্টা হয়ে থাকে, তাহলে উনি( বিচারপতি গঙ্গোপাধ‌্যায়) তো বলতে পারতেন এসএসসি চাকরি দিক। অতিরিক্ত শূন্যপদ থেকে কেন চাকরি দেওয়ার কথা বললেন?”

২০১৬ সালে ওএমআর সংরক্ষণের বিধি চালুর মাধ্যমেই এখন হাজার হাজার চাকরি বাতিলের বীজ বপন করা হয়েছিল বলে মনে করছে শিক্ষা মহলের একটা বড় অংশ। ওই বিধি সংশোধন করা হবে বলে এদিন এসএসসি চেয়ারম‌্যান জানান। দলের প্রাক্তন মন্ত্রীর সময়ে আনা বিধিতেই সমস্যার প্রসঙ্গে এদিন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “দল দায় এড়াচ্ছে না। তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এবং কয়েকজন যদি বিতর্কিত কাজে জড়িয়ে থাকেন, দায় তাঁদের। তিনি যেহেতু সরকারের মন্ত্রী, দলের মহাসচিব, দল তাই ব্যবস্থা নিয়েছে। দল তো তাকে এই কাজগুলো করতে বলেনি।”

[আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে লড়তে নারাজ! রায়বরেলি থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব ফেরালেন বরুণ গান্ধী] e

উল্লেখ‌্য, সম্প্রতি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে আদালতের ভূমিকার এদিন সমালোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‌্য বসু (Bratya Basu)। তাঁর বক্তব‌্য, যদি কেউ ‘অপরাধী’ হয়ে থাকে, তাহলে তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত। সেই সুযোগ আদালত দেয়নি। অযোগ্যদের সরিয়ে সেই জায়গায় অপেক্ষমান যোগ্যদের নিয়োগ করার বিষয়ে এসএসসির আবেদনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। সেই আবেদন আদালতে গৃহীত হয়নি। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এক ধাক্কায় ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নেপথ্যেও রাজ্যের সেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের ভূমিকাই ফের কাঠগড়ায়।
  • ওএমআর (OMR) যথাযথভাবে সংরক্ষিত না থাকাই  নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক এবং গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি স্তরের ওই শিক্ষাকর্মীদের চাকরি খারিজের অন‌্যতম কারণ।
  • ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের ওএমআর শিট সংরক্ষণ সংক্রান্ত নতুন বিধি চালু হয় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে।
Advertisement