স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্চায়েত ভোটের (Bengal Panchayat Election 2023) মনোনয়ন শেষ হতেই রাজ্য রাজনীতিতে এক বড় বিস্ফোরণ। প্রকাশ্যে আইএসএফ ও বিজেপির গোপন আঁতাত। শুক্রবার রাতে তৃণমূল মুখপাত্ররা আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি এবং বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের পিএ’র বিধানসভা ভোটের সময় হওয়া গোপন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করে টুইট করতেই চাঞ্চল্য পড়ে যায়। দলের মুখপাত্রদের টুইট করা চ্যাটের স্ক্রিনশট রিটুইট করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় হওয়া ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করে ভাঙড় থানার আইসি এবং সেকেন্ড অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও নিত্যানন্দ রাইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন নওশাদ। অভিষেক তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘এই চ্যাট থেকে প্রমাণিত যে বিজেপি নেতারা রাজ্যের ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করেছিল। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া উচিত এবং বিস্তারিত তদন্ত হওয়া দরকার।’’
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে কমিশন ও রাজ্য]
নিত্যানন্দ রাইয়ের পিএ’র সঙ্গে চ্যাটে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে লেখা তাঁর চিঠি ফরোয়ার্ড করে নওশাদ মেসেজ করে জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি আগেই কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে পাঠিয়েছেন। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে চ্যাটেও দেখা যাচ্ছে, ভাঙড়ের আইসি শ্যাম সাহা ও সেকেন্ড অফিসার রেফাজুল মণ্ডলকে বদলি করার বিষয়ে কথা বলছেন নওশাদ। বিধানসভা ভোটে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে ছিলেন কৈলাস। নৌশাদ কেন ভাঙড়ের আইসিকে সরাতে বিজেপি নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, প্রশ্ন তা নিয়ে। ভোটের ফলপ্রকাশের পরও নৌশাদ কৈলাসের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা বিনিময় করেছেন। তাঁকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধনও করেছেন। ফোনে কথা বলার জন্য সময় চেয়েছেন। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ অবশ্য এই স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাই করেনি।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রাতে তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘তাহলে কি নওশাদ সিদ্দিকির মাধ্যমেই বিজেপির সঙ্গে গোপন সেতুবন্ধন রাখত সিপিএম? নওশাদ আর বিজেপি নেতাদের গোপন হোয়াটসঅ্যাপ সত্যি হলে এই প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক। ২০২১-এ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় এই বিশ্বাসঘাতকতা কারা করেছিল?’’ নওশাদের ব্যাখ্যাও দাবি করেছেন কুণাল।
এই চ্যাট ফাঁস হওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ভাঙাতে কি আইএসএফকে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিই তৈরি করেছিল? বিজেপি নেতাদের সঙ্গে এই চ্যাট নিয়ে নওশাদ কী বলেন, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।