সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর ছেলে, স্ত্রী, জীবনকৃষ্ণ সাহা, কুন্তল ঘোষ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত তাবড় তাবড় নেতারা ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। বুধবারই জামিন দেওয়া হয়েছে কৌশিক ঘোষ, শেখ আলি ইমাম, চন্দন মণ্ডল, সুব্রত সামন্তদের। কিন্তু এখনও জেলমুক্তির স্বাদ পাননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক কুমার সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং এসপি সিনহা।
বুধবারও এই পাঁচজনের জামিন মামলার রায়দান ছিল হাই কোর্টে। পার্থ-সুবীরেশ-কল্যাণময়দের জামিন নিয়ে পরবর্তীতে দীর্ঘ শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। বুধবার রায়দানের সময় দেখা গেল দুই বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছেন। মামলা শোনার পর বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সব অভিযুক্তকেই জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় পার্থ-সহ পাঁচ অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেননি।
এখন প্রশ্ন হল, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাবড় তাবড় নেতা-বিধায়করা জামিন পেলেও পার্থ, এসপি সিনহা, কল্যাণময়দের কপালে কেন শিকে ছিঁড়ছে না? আসলে পার্থকে ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসাবে চিহ্নিত করেছে ইডি। তাছাড়া পুরো দুর্নীতির অভিযোগ যে সময়ের সে সময় তিনিই ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে জামিন দিলে তথ্যপ্রমাণ লোপাট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
পার্থ-সুবীরেশরা জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত করতে পারে বলেও আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছে। কারণ পার্থ ছাড়াও বাকি যারা এখনও জেলা তারা প্রত্যেকেই সেসময় শিক্ষা দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে কাজ করতেন। সুবীরেশ এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান, অশোক কুমার সাহা এসএসসির প্রাক্তন সহকারী সচিব, শান্তিপ্রসাদ সিনহা এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। অর্থাৎ এঁরা প্রত্যেকেই প্রভাবশালী। তাছাড়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অভিযোগ এরা সকলেই সেসময় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বাকি যারা জামিন পেয়েছেন তাঁরা কেউ সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন না। তাঁরা মূলত লিংকম্যান বা মিডলম্যান হিসাবে কাজ করতেন। যদিও এসব যুক্তি সত্ত্বেও এদিন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থদের জামিন দেন। বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের আপত্তিতে জেলমুক্তি হয়নি পার্থদের।