অর্ণব আইচ: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও। ইডি’র জেরায় এমনই বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল যুব নেতার। প্রাক্তন শিক্ষান্ত্রীর সেক্রেটারির হাত দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৫ কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন বলেও দাবি কুন্তলের।
প্রথম দিকে ইডি আধিকারিকদের তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন কুন্তল ঘোষ। তবে টানা জেরায় ভেঙে পড়েন তিনি। তদন্তকারীদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে বসেন। তাঁর দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছেন। তবে একসঙ্গে বিপুল টাকা দেননি কুন্তল। কখনও নাকতলার অফিস আবার কখনও শপিং মলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেক্রেটারির সঙ্গে দেখা করতেন কুন্তল। তাঁর হাত দিয়ে টাকা সরাসরি পৌঁছে যেত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে।
[আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফের বঙ্গে ফিরবে শীত? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]
কুন্তলের এই স্বীকারোক্তি আরও খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেই দাবি ইডি আধিকারিকদের। তবে দুর্নীতির জাল যে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তা বুঝতে বিশেষ বেগ পেতে হচ্ছে না ইডি আধিকারিকদের। এর আগেই কুন্তলের দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে তাপস মণ্ডলের নাম লেখা একটি ধূসর রঙের ডায়েরি ইডি উদ্ধার করেছে। সেই ডায়েরিটি মুখোমুখি জেরার সময় কুন্তল ও তাপসের সামনে রাখা হয়। ডায়েরিতে উল্লেখ করা আছে ১৯ কোটি টাকার হিসাব। সেই টাকা তাপস কুন্তলকে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ওই টাকা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু নথিও তাপস দেখান, যেখানে কুন্তলের সই রয়েছে। এরপর কুন্তল স্বীকার করেন যে, তিনি তাপসের কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন। কুন্তল ঘোষ দাবি করেন যে, ‘‘আকাশছোঁয়া ষড়যন্ত্র হয়েছে।’’
এদিকে, বৃহস্পতিবার টানা প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা জেরার পরেও হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। উল্লেখ্য, শান্তনুর হুগলির বলাগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার বেশ কিছু পরীক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ডের ফটোকপি উদ্ধার হয়। ইডি’র অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিতে টাকা তোলার জন্যই চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ওই ফটোকপিগুলি। ওই চাকরিপ্রার্থীরা প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন কি না, সেই বিষয়টি যাচাই করার জন্য ফের শান্তনুকে ইডি’র গোয়েন্দারা জেরা করবেন বলেই সূত্রের খবর।