রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির (BJP) কোন্দল ফের প্রকাশ্যে। বর্তমান রাজ্য নেতাদের উপর অনাস্থা প্রকাশ করে এবার সদর কার্যালয়ের সামনে ফের পড়ল পোস্টার। ‘বঙ্গ বিজেপি বাঁচাতে সুব্রতকে চাই’ বলে লেখা রয়েছে পোস্টারে। শনিবার সকাল থেকে সেই পোস্টার ঘিরে ফের গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল। এর আগে শুক্রবার নদিয়া-সহ শহরতলির একাধিক জেলায় এই পোস্টার পড়েছিল। যা নিয়ে নতুন করে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল গেরুয়া শিবিরে। এবার একেবারে রাজ্য বিজেপি দপ্তরের সামনে এই ব্যানার-হোর্ডিং পড়ল। শনিবার বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনে এই ব্যানার ও হোর্ডিং পড়েছে। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) ছিলেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে আরএসএসের (RSS) বড় দায়িত্বে রয়েছেন সুব্রতবাবু।
সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে (Subrata Chatterjee) বঙ্গ বিজেপির সংগঠনে ফিরিয়ে আনার দাবি নেপথ্যে যুক্তিও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha Election) যে ১৮টি আসন বিজেপি পেয়েছিল তার পিছনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন সুব্রতবাবু। সেই সময়ে দিলীপ ঘোষ ও সুব্রত চট্টোপাধ্যায় জুটির হাত ধরেই সাফল্য পেয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু দিলীপ ঘোষ ও সুব্রতবাবুকে বাংলায় দলের দায়িত্ব থেকে সরানোর পরই বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চরমে উঠেছে। দুর্বল হয়েছে সংগঠন। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) ও সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীদের নেতৃত্বকে ‘অযোগ্য’ বলে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের অনেকেই।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতিকে ‘অপমান’, অখিল গিরিকে নোটিস জাতীয় মহিলা কমিশনের, পথে বিজেপি]
রাজ্য বিজেপিতে কোন্দলও তীব্র আকার নিয়েছে। শনিবার সকালে মুরলীধর সেন লেনের কার্যালয়ের সামনে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে গেল। যে পোস্টার দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা – ‘বঙ্গ বিজেপির হাল ফেরাতে ১৮ টি লোকসভা আসন জয়ের অন্তরালের কারিগর সুব্রত চ্যাটার্জী মহাশয়কে অবিলম্বে ফেরাতে হবে।’ দিলীপ-সুব্রত জুটি রাজ্যে দলের সংগঠনকে বাড়িয়ে ছিলেন, শক্তিশালী করে তুলেছিলেন বলে দাবি পুরনো বিজেপি নেতা, কর্মীদের। তাই এবার সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে পোস্টার লাগিয়ে তাঁকে রাজ্য বিজেপির সংগঠনে ফিরিয়ে আনার দাবি উঠল। একইসঙ্গে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব বদলের দাবিও উঠেছে দলের মধ্যে।
[আরও পড়ুন: সম্পত্তি হাতাতে সম্পর্কে ‘বিষ’ ঢালে ছেলে, ডিভোর্স ভুলে আদালতে হাতে হাত প্রবীণ দম্পতির]
আদি-নব্য দ্বন্দ্বে জর্জরিত পদ্ম শিবির। এই পরিস্থিতি ফের সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে সংগঠনে আনার দাবি উঠেছে দলের মধ্যেই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ঘটনায় স্পষ্টতই বিব্রত গেরুয়া শিবির। নিচুতলার কর্মী, সমর্থকদের দাবি নিয়ে কী পদক্ষেপ নেন সুকান্ত-অমিতাভরা, সেটাই দেখার।