গোবিন্দ রায়: খুনের দায়ে দমদম জেলে বন্দি বীরভূমের আলিম। ছিনতাই ডাকাতি-সহ একাধিক মামলায় জড়িয়েছে বারুইপুরের আমির আলির নাম। এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় তারা কী করবেন তা নিয়ে চিন্তায়। নাজেহাল দশা পরিবারের সদস্যদের। শুধু এরাই নয়। রাজ্যের ৫৯টি সংশোধনাগারে বন্দিদের একটাই প্রশ্ন এসআইআরে আমাদের কী হবে?
এই বন্দিদের নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তিই জারি করেনি জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ফলে একদিকে এদের এসআইআর নিয়ে যেমন ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে অন্যদিকে, চিন্তায় এই বন্দিদের পরিবারগুলিও। তবে কারা দপ্তর জানিয়েছে ফর্ম নিয়ে এলে সংশোধনাগারের নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে দিয়ে তা পূরণ ও সই করিয়ে পরিজনদের হাতে ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
রাজ্যের ৫৯টি সংশোধনাগারের মধ্যে ৭ টি সেন্ট্রাল কারেকশনাল হোম, ৩ টি ওপেন কারেকশনাল হোম, ৫টি স্পেশাল কারেকশনাল হোম, ১ টি ওম্যান কারেকশনাল হোম, ১২টি জেলা সংশোধনাগার ও ৩১টি উপ-সংশোধনাগার। সব মিলিয়ে বিচারাধীন ও দোষী সাব্যস্ত বন্দির সংখ্যা লক্ষাধিক। তাঁদের কী হবে?
করোনা সময়কাল থেকে এই বন্দিদের নিয়ে আদালত বান্ধব হিসেবে কাজ করে আসছে হাই কোর্টের আইনজীবী তাপস ভঞ্জ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "দুই ধরনের বন্দি রয়েছে। একটি বিচারাধীন, অন্যটি দোষী সাব্যস্ত। ২ বছরের বেশি সাজা হলে দোষীরা ভোটে দাঁড়াতে পারবে না। তবে ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। পরিবারের সদস্যরা সংশোধনাগারে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম সই করিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন। তারপর যেমন প্রক্রিয়া তেমন হবে। এসআইআরে কোনও বাধা নেই। দোষী সাব্যস্ত বন্দি প্যারলে বেরিয়ে ভোট দিতে পারবে। যাঁরা বিচারাধীন বন্দি তাঁরা জামিনে মুক্ত হলে ভোট দিতে পারবে।"
গত ২৭ অক্টোবর বাংলায় এসআইআর ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রক্রিয়া। এনিয়ে ইতিমধ্যেই আমজনতার মনে হাজার হাজার প্রশ্ন। এই নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এই আবহে এসআইআর নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছে। সেই মামলা অবশ্য বিচারাধীন হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে। তারই মধ্যে এসআইয়ের তালিকায় বন্দিদের নাম রাখা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। বারুইপুর থেকে দমদম, বসিরহাট থেকে বর্ধমান, গোটা রাজ্যের ৫৯ সংশোধনাগারে বন্দিদের একটাই প্রশ্ন আমাদের এসআইআরে কী হবে?
কারা দপ্তর সূত্রের খবর, ফর্ম নিয়ে এলে সংশোধনাগারের নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে দিয়ে তা পূরণ ও সই করিয়ে পরিজনদের হাতে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, "কয়েকটি সংশোধনাগার থেকে খবর পেয়েছি, এখনও পর্যন্ত মূলত বিচারাধীন বন্দিদের পরিজনেরাই ফর্ম নিয়ে আসছেন। তবে, সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের পরিজনেরা ফর্ম নিয়ে এলে তাঁরাও একই সুবিধা পাবেন।" দপ্তরসূত্রের খবর, বন্দি অবস্থায় ভোটাধিকার না-থাকলেও ভোটার লিস্টে নাম রাখা বা এসআইআর-এর মতো প্রক্রিয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে বন্দিদের পরিজনেরা সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নিয়ম মেনেই নথিপত্রে সইসাবুদের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
