বিধান নস্কর: আবর্জনা স্তূপের কারণে বিপর্যস্ত হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকা। আবর্জনা স্তূপের কারণে রাসায়নিক মাটিতে মিশে ভূমিধস, দিকে দিকে বাড়ি ভেঙে পড়ছে, একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। জল নেই, খাবার নেই, গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। এবার আতঙ্কে ভুগছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ। কারণ এই ওয়ার্ডে রয়েছে বিশাল ধাপা। বিমানবন্দরের দিক থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এগিয়ে গেলে রাস্তার ঠিক বাঁ দিকে পড়বে। যেখানে দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম ও দমদম পুরসভা-সহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার আবর্জনা এনে জড়ো করা হয়।

দক্ষিণ দমদমের বাসিন্দা তপন মণ্ডল আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, দীর্ঘ বছর ধরে রয়েছে এই আবর্জনা স্তূপ। কোনওরকম নিয়ম না মেনেই এখানে আবর্জনা ফেলা হয়। কিছুদিন আগে হাওড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এটা রক্ষণাবেক্ষণ না হলে বড়সড় বিপর্যয় এখানেও হতে পারে। আর এক বাসিন্দা মিনতি বিশ্বাসের মতে, ‘‘এই আবর্জনার কারণে এলাকায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ, পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। আর হাওড়ায় যা হয়েছে এখন আমরাও ভয়ে আছি যদি সেই একই ঘটনা এখানেও ঘটে। প্রশাসন যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেয় তাতে আমরা এলাকাবাসীরা উপকৃত হব।’’
নিয়ম অনুযায়ী পচনশীল, অপচনশীল, মেডিক্যাল এবং প্রাণিজ বর্জ্য আলাদা আলাদাভাবে ডাম্প করার কথা। যা এই ভাগাড়ের ক্ষেত্রে মানা হয় কি না তা নিয়ে এলাকাবাসী ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালিচোখে দক্ষিণ দমদমের এই ধাপাতে পচনশীল বর্জ্য ও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য একই সঙ্গে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। বিশাল আবর্জনা স্তূপ থেকে নিয়ে সেগুলি একই সঙ্গে প্রসেস করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সময়ে এই আবর্জনা স্তূপে মিথেন গ্যাস জড়ো হয়ে আগুন ধরে যায়। গোটা এলাকায় ছড়ায় দুর্গন্ধ এবং ঘন ধোঁয়ায় স্থানীয় অঞ্চল ছেয়ে থাকে। অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষ সমস্যার মধ্যে রয়েছে। সাম্প্রতিক হাওড়ায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার অনুরূপ ঘটনা এখানেও ঘটতে পারে বলে আতঙ্কে ভুগছে এলাকার মানুষ। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান কস্তুরী চৌধুরি জানান, ‘‘এই আবর্জনার স্তূপ সম্পর্কে আমার জানা নেই। পুরসভার সংশ্লিষ্ট দপ্তর এটা দেখাশোনা করে। তবে সেখানে যদি কিছু বেনিয়ম হয়ে থাকে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’