shono
Advertisement
Kolkata

নিঃসঙ্গতা কাটাতে সঙ্গী 'সন্তান', একাকী প্রবীণদের পাশে শহরের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

ছেলেমেয়ের মতোই গল্প করবেন তাঁদের সঙ্গে, সিনেমা দেখাতে, পুজোর বাজার করাতেও নিয়ে যাবেন।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 02:17 PM Apr 08, 2025Updated: 02:17 PM Apr 08, 2025

নব্যেন্দু হাজরা: ছেলে মেয়ে কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে বিদেশে থাকেন। বাড়িতে বাবা-মা একা। সঙ্গী শুধু নিঃসঙ্গতা। বছরে এক-আধবার সন্তানের দেখা মিললেও বাকি সময়টা কাটে একাকিত্বেই। সময়ে ওষুধ খাওয়া, আর নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে ফোনে একটু খোঁজখবর। ব্যস। তাতেই জীবন কাটছে অধিকাংশ শহুরে প্রবীণদের। শরীর সক্ষম থাকলেও সঙ্গহীন তাঁরা। সিনেমা দেখা, চৈত্র সেল বা পুজোর বাজার করতে যাওয়া, শীতের দুপুরে পিকনিক- এসবই তাঁদের স্মৃতিরোমন্থনের সাবজেক্ট এখন। কোনওটাই আর করা হয় না পরুকেশের এই মানুষগুলোর। 

Advertisement

তাঁদের এই ইচ্ছাগুলোই পূরণ করতে শহর-শহরতলিতে তৈরি হয়েছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যাঁরা কিনা সঙ্গে আছেন, পাশে আছেন। শুধু জরুরি পরিষেবা নয়। ছেলেমেয়ের মতোই গল্প করবেন তাঁদের সঙ্গে, সিনেমা দেখাতে, পুজোর বাজার করাতেও নিয়ে যাবেন। বছরে পিকনিক, দোল সবই তাঁরা করাবেন। তা ছাড়া শরীর খারাপ হলে তো আছেনই। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া থেকে চিকিৎসক ডেকে আনা, ডায়ালসিস করানো, সবেতেই আছেন এই সমস্ত সংস্থার কর্মীরা। তবে অর্থের বিনিময়েই। হতে হবে এই সব সংস্থার সদস্য।

বারাসতের এমনই এক সংস্থার আধিকারিক জানান, যে সমস্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে এলাকার বাইরে চলে গিয়েছে, সেই সব পরিবারের প্রবীণদের জন্য মেডিক্যাল এবং নন মেডিক্যাল পার্টে নানা রকম সাপোর্ট দেওয়া হয়। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা সবটাই করা হয়। কেমোথেরাপি, ডায়ালিসিস- এ ধরনের কাজেও ম্যান পাওয়ার প্রোভাইড করা হয়। এ ছাড়া পেনশন তোলা, ট্যাক্স জমা করার মতো অফিসিয়াল কাজও করেন সংস্থার লোকজন। তাছাড়া ফোনে বা বাড়ি এসে গল্পগুজবও তাঁদের কাজের মধ্যে পড়ে।

বারাসতের এই ধরনের সংস্থার এক সদস্য মৈত্রেয়ী দাশগুপ্ত বলেন, "ডাক্তারের কাছে চেকআপে নিয়ে যাওয়া থেকে ছোট ছোট গেট টুগেদারের আয়োজন করা, ছোট উইকএন্ড টুর করা হয়। এ ছাড়া ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের কাজকর্ম এই সব মিলিয়েই আমাদের সার্ভিস।" তাঁদের কাছ থেকে পরিষেবা পেয়ে খুশি বহু প্রবীণ নাগরিকও। আরতি দাম যেমন বলেন, "খুবই নিশ্চিন্ত বোধ করি। ছেলেরা বিদেশে। এই বয়সে 'সাথে আছি'-র উপরেই ভরসা করে আছি। একই কথা আরেক দম্পতি সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সোমা মুখোপাধ্যায়ের কথাতেও। বলেন, "আমরাও এক বেসরকারি সংস্থার থেকে পরিষেবা নিই। যখন যেরকম দরকার পড়ে সে রকমই পেয়েছি। খুবই ভালো পরিষেবা।"

বিশিষ্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, "এখন অনেকের ছেলেমেয়েই কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে শহর, রাজ্যের বাইরে থাকেন। এখানে একাকী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এই সব সংস্থা যদি অর্থের বিনিময়েও তাঁদের সবরকম টেক কেয়ার করে, তবে তো খুবই ভালো। আমার কাছে এরকম রোগীও আসেন, যাঁদেরকে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা নিয়ে আসেন। ভিডিও কলে ছেলে বা মেয়েদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। একাকিত্ব কাটানোটা খুবই দরকার।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ছেলে মেয়ে কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে বিদেশে থাকেন। বাড়িতে বাবা-মা একা। সঙ্গী শুধু নিঃসঙ্গতা।
  • বছরে এক-আধবার সন্তানের দেখা মিললেও বাকি সময়টা কাটে একাকিত্বেই।
  • তাঁদের এই ইচ্ছাগুলোই পূরণ করতে শহর-শহরতলিতে তৈরি হয়েছে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
Advertisement