গোবিন্দ রায়: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগে ফের জটিলতা বাড়ল। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য এসএসসি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ১০ নম্বর বরাদ্দ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সম্প্রতি এসএসসির ফল প্রকাশের দিনই এসএসসির ওই অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে৷ এই মামলায় আগেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই সংক্রান্ত মামলার রায়ের উপর। বুধবার অবশ্য তিনি কোনও নির্দেশ দিলেন না। কারণ মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আগামী ২৬ নভেম্বর শীর্ষ আদালতে তার শুনানি। তাই আপাতত মামলার শুনানি মুলতুবি রাখলেন বিচারপতি সিনহা।
এখন শীর্ষ আদালত কী নির্দেশ দেয়, তা দেখার পর হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে মামলাকারীরা হলফনামা দিয়ে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারবেন। ২৮ নভেম্বর হাই কোর্টে এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ফলে হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া এই মামলায় যে জটিলতা বাড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে, এদিন হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি পর্বে এক প্রস্থ নাটক দেখা গেল ভরা এজলাসে। মামলা চলাকালীন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যেসমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা ১০ নম্বর করে পেয়েছেন তাঁদের তরফে আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামীর বক্তব্যের পরই একদল পরীক্ষার্থীকে অতিউৎসাহিত হয় হাততালি দিতে দেখা যায়। তাঁরা একপক্ষের আইনজীবীর যুক্তি সমর্থন করেন। তাতেই বিরক্ত হন বিচারপতি সিনহা। তিনি পুলিশ ডেকে তাঁদের বের করে দেন। বিচারপতির স্পষ্ট বার্তা, 'মাস রিলেটেড' মামলায় অর্থাৎ, যে মামলার সঙ্গে একসঙ্গে অনেকে যুক্ত, সেখানে মক্কেলদের এজলাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এপ্রসঙ্গে বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তাঁর মোবাইল বের করে একটি হোয়াটসঅ্যাপ আদালতে দেখান। ওই হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজটিতে কেউ এদিনের মামলায় তাঁদের পক্ষের মক্কেলদের সকাল থেকে এজলাসে ভিড় জমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে আদালতের উপর চাপ তৈরি হবে, ইঙ্গিত দেওয়া হয় ওই বার্তায়৷ তার প্রেক্ষিতে বিচারপতির বক্তব্য, "এইভাবে কি আর চাপ দেওয়া যায়!" বিচারপ্রার্থীদের কৌতূহল প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, এই এজলাসে সকাল থেকে শেষ পর্যন্ত শুনানির নিরবচ্ছিন্ন লাইভ হয়। ফলে সেই লাইভ দেখে নিজেদের কৌতূহল মেটানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তবে এসএসসিতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আরও দুটি বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে হাই কোর্টে। একটি উত্তর পত্র বিভ্রাট সংক্রান্ত, অপরটি জাতিগত শংসাপত্র আপডেট করার সুযোগ দেওয়া নিয়ে। এই দু'টি মামলারই শুনানি রয়েছে চলতি সপ্তাহে।
