ধীমান রক্ষিত: রাজ্যে একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদের সংখ্যা আরও বাড়ছে। শুক্রবারই স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই শিক্ষক নিয়োগের ফল বেরিয়েছে। একসঙ্গে বহু পরীক্ষার্থী ফল দেখতে যাওয়ায় সমস্যা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এসএসসি-র নিজস্ব ওয়েবসাইটে ফল অনেকেই জানতে পারেননি। তবে শনিবারই তাঁদের সুবিধায় নতুন একটি ওয়েবসাইট খুলে দেওয়া হয়। ফলে সব চাকরিপ্রার্থী তাঁদের ফল জানতে পারেন। এদিনও পর্যন্ত একাদশ-দ্বাদশে ১২,৫১৪টি শূন্যপদ রয়েছে। তবে এই শূন্যপদ আরও ৭০০ থেকে ৮০০টি বাড়তে চলেছে বলে এসএসসি সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। তবে ঠিক কত পদ বাড়ছে, বুধবার নাগাদ তা জানা যেতে পারে।
বিকাশ ভবন থেকে বাড়তি শূন্যপদের হিসেব এলে তার ভিত্তিতে একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউয়ের তালিকা তৈরি হবে। ১০০টি শূন্যপদের জন্য ১৬০ জনকে অর্থাৎ ১:৬ অনুপাতে ইন্টারভিউতে ডাকা হবে বলে এসএসসি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এসএসসি-র এক আধিকারিক জানান, নতুন পরীক্ষার্থীদের পক্ষে শূন্যপদের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি ছিলই। আর ছাত্র-শিক্ষক ভারসাম্য বজায় রাখাটাও প্রয়োজন। রাজ্য সরকার সেইমতো একাদশ-দ্বাদশ এবং নবম-দশমে শিক্ষকদের শূন্যপদ বাড়াতে চলেছে। আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার বাড়তি শূন্যপদ বিকাশ ভবন থেকে পাওয়া যাবে। পুরো শূন্যপদ পেলেই ইন্টারভিউয়ের তালিকা তৈরি করা হবে। ৮০ নম্বরের ভিত্তিতে নথি ইন্টারভিউয়ের তালিকা তৈরি হতে পারে এবং তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হতে পারে বলে এসএসসি সূত্রের খবর।
তবে কারা ইন্টারভিউতে ডাক পাবেন তা নিয়ে এখনও ধন্দে চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর। সেখানে ১০ নম্বর ধরা রয়েছে। একজন প্রার্থী ১০ নম্বরও পেতে পারেন, আবার তার কমও পেতে পারেন। এরপর কাজের অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর রয়েছে। 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের অন্যতম নেতা মেহবুব মণ্ডলের কথায়, "লিখিত পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছি, তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পাওয়া নম্বর। এই তিনটি নম্বর যোগ করে যাঁরা সর্বোচ্চ নম্বর পাবেন, তাঁরাই নথি পরীক্ষার জন্য ডাক পাবেন। তাঁরাই ইন্টারভিউ পর্যন্ত পৌঁছবেন। ফলে সমস্যা রয়েছে।" মামলার কারণে নিয়োগ বানচালের শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না মেহবুব।
এদিকে ফলপ্রকাশের সঙ্গে শুক্রবারই লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র আপলোড করেছে এসএসসি। জানা যাচ্ছে, মাত্র দু-তিনটি বিষয়ে চারটি ভুল উত্তর রয়েছে। ভুল উত্তরের জন্য পরীক্ষার্থীদের পুরো নম্বর দেওয়া হয়েছে। একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এসএসসি পুরোদস্তুর তৈরি থাকলেও নিয়োগের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেও এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারল না। চলতি বছরে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ফলে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারাও যথেষ্ট দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। কারণ, ৩১ ডিসেম্বরের পর তাঁরা শিক্ষকের তকমা হারাবেন।
