shono
Advertisement

হোমের একাধিক শিশুর জ্বর-কাশি, গাইডলাইন মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ হাই কোর্টের

৩০ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট জমার নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। The post হোমের একাধিক শিশুর জ্বর-কাশি, গাইডলাইন মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ হাই কোর্টের appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:28 PM Apr 24, 2020Updated: 07:28 PM Apr 24, 2020

শুভঙ্কর বসু: রাজ্যের চাইল্ড কেয়ার হোমগুলির একাধিক শিশুর শরীরে জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ মিলেছে। অথচ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চের (ICMR) গাইডলাইন মানা হচ্ছে না। রাজ্যের এই ঢিলেঢালা মনোভাবে যারপরনাই ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্ট। অবিলম্বে দুই সংস্থার গাইডলাইন মেনে শিশুগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিল আদালত। পাশাপাশি এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চাইল্ড কেয়ার হোমগুলির ব্যবস্থাপনায় রাজ্য যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তাতে বিস্তর অসঙ্গতি রয়েছে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। হোমের শিশুদের সুরক্ষায় রাজ্যকে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।

Advertisement

হোমগুলিতে করোনার ছোঁয়াচ এড়াতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল হাই কোর্ট। এরপর হোমের শিশু ও আবাসিকদের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিটি জেলা আদালতের প্রধান বিচারক, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড, চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি ও হোম সুপারদের কাছ থেকেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় বেঞ্চ। সবকটি রিপোর্ট জমা পড়ার পর দেখা গিয়েছে, রাজ্যের তরফে হোমগুলিতে করোনা মোকাবিলায় যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হয়েছে বাস্তবে তার মিল নেই। রাজ্যের মোট ৭১ টি সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোমে মোট ৩৯০৪ জন শিশু রয়েছে।

জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ থাকায় এখনও পর্যন্ত মোট ১০৪টি শিশুকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে বলে আদালতে জানানো হয়েছে। কিন্তু কিভাবে তাদের চিকিৎসা করা হচ্ছে বা অন্য শিশুদের সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে সে বিষয়ে রিপোর্টে কিছুই উল্লেখ নেই। অথচ জেলা আদালতের প্রধান বিচারক, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড, চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি ও হোম সুপারদের কাছ থেকে আদালতের যে তথ্য পেয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের একাধিক হোমে আইসোলেশন তৈরির মতো পরিকাঠামোই নেই। হোমের চিকিৎসকরা ওই সব শিশুদের দেখভাল করলেও করোনা সংক্রান্ত গাইডলাইন মেনে তাদের চিকিৎসা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে কোনও রিপোর্টেই কিছু উল্লেখ নেই।

এছাড়াও আদালতে রাজ্য দাবি করেছে, করোনা পরিস্থিতি দেখা দিতেই প্রতিটি হোমে পর্যাপ্ত সংখ্যায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, লিকুইড সোপ ও সাবানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোমগুলিতে জীবাণুনাশক ছড়াতে প্রতিটি জেলায় পৃথক টিম তৈরি করেছেন জেলাশাসকরা। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চের কাছে একাধিক হোম পর্যাপ্ত সংখ্যক স্যানিটাইজার, লিকুইড সোপ ও সাবান না মেলার অভিযোগ জানিয়েছে। নিয়মিত জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে না বলেও দাবি তাদের। এমনকি জরুরি সামগ্রী কেনার জন্য প্রতিমাসে যে ফান্ড আসার কথা তাও পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে একাধিক হোম।

[আরও পড়ুন: মৃত্যু নির্ধারণ করতে অডিট কমিটি কেন? মুখ্যসচিবকে জোড়া চিঠি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের]

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর এবং রাজ্য শিশু ও নারী কল্যাণ দপ্তরের সচিবদের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, হোমের শিশুদের জ্বর ও সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ মেলামাত্রই হু এবং আইসিএমআর-এর গাইডলাইন মেনে প্রতি পঞ্চম ও ১৪তম দিনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের হাসপাতালে পাঠাতে হবে। হোমের শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় প্রতি জেলায় যে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে তারা প্রতি সপ্তাহে আদালতের রিপোর্ট জমা দেবে। অসুস্থ শিশুরা যাতে হোমের অন্য শিশুদের সংস্পর্শে না আসে তার ব্যবস্থা করতে হবে। পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কের পাশাপাশি প্রতি শিশুর জন্য আলাদা সাবান ও তোয়ালের ব্যবস্থা করতে হবে। লকডাউন চলাকালীন হোম সুপার ও কাউন্সিলরদের ২৪ ঘন্টা হোমে থাকতে হবে। তাঁরা হোম ছাড়তে পারবেন না। এছাড়াও হোমগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য পূর্ত দপ্তরকে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের এই নির্দেশ কতটা কার্যকর করা গিয়েছে তা নিয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজ্যকে। ওই দিন মামলার পরবর্তী শুনানি।

The post হোমের একাধিক শিশুর জ্বর-কাশি, গাইডলাইন মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ হাই কোর্টের appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement