রিংকি দাস ভট্টাচার্য: সমস্যার অবশেষে সমাধান হল। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখানো হবে তথ্যচিত্র ‘রাম কে নাম’। তবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হবে না তথ্যচিত্রটি। উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ওপেন স্ক্রিনিংয়ে দেখানো হবে ‘রাম কে নাম’। শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, বিকেল ৪টেয় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন, পোর্টিকোতে ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে এটি দেখানো হবে।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের তরফ থেকে একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা রয়েছে, এদিন আনন্দ পটবর্ধনের তথ্যচিত্র ‘রাম কে নাম’ প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা অনুমতি নিতে যান। তাঁরা কর্তৃপক্ষের সুবিধে মতো তারিখেই ছবি স্ক্রিনিংয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাও কর্তৃপক্ষ প্রস্তাব খারিজ করে স্ক্রিনিং বন্ধ রাখার নির্দেশ বহাল রাখে। ছাত্রছাত্রীদের জানানো হয়, কোনও ধরনের রাজনৈতিক ছবির স্ক্রিনিং বিশ্ববিদ্যালয়ে করা যাবে না। দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে কর্তৃপক্ষের এ হেন আচরণে তাঁরা উদ্বিগ্ন। বিষয়টিকে অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
[ আরও পড়ুন: যাদবপুরের পথে হেঁটেই প্রেসিডেন্সিতে খোলা আকাশের নিচে প্রদর্শিত হবে ‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্র ]
তবে এমন পরিস্থিতিতে পিছিয়ে আসতে রাজি নন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলিকে প্রেসিডেন্সির মাটিতে একচুলও জায়গা ছাড়তে তাঁরা রাজি নন। “বরং আরও দৃঢ়ভাবে প্রেসিডেন্সির ২০০ বছরের ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে ক্যাম্পাসে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিসরের স্বার্থে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ওপেন স্ক্রিনিং-এর উদ্যোগ নিয়েছি।” বলেছেন উদ্যোক্তারা।
‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্রটি বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও সেই জায়গায় রামের মন্দির প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ নিয়ে তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে হিন্দু পরিষদের ক্যাম্পেনের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৯০ সালে আডবানীর রথযাত্রার কথাও বর্ণনা করা রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি ভিডিও-ও রয়েছে সেখানে। ১৯৪৯ সালে মন্দিরের একটি ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে ভিডিওয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতে, মসজিদের মধ্যে হঠাৎই রামের মূর্তি দেখা গিয়েছিল। রাম আকাশ থেকে নেমে এসে মসজিদে উপস্থিত হয়েছিলেন।
তথ্যচিত্রে মুসলিম বাসিন্দাদের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারও রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্য পটবর্ধনের একটি সাক্ষাৎকারও রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, দরকার হলে তাঁরা জোর করে অযোধ্যা ছিনিয়ে নেবেন। আবার এও দেখানো হয়েছে, যারা রাম মন্দির নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে অযোধ্যায়, তারা রামের জন্মের তারিখও ঠিকমতো জানে না। এছাড়া তথ্যচিত্রে যেমন আটের দশকের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনই নাথুরাম গডসের হাতে মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু সংক্রান্ত ক্লিপিংসও দেখানো হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: ‘রাম কে নাম’ দেখানোর সিদ্ধান্তে অনড় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রদর্শনী বন্ধ প্রেসিডেন্সিতে ]
The post কাটল জট, ‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্র দেখানোর সিদ্ধান্ত নিল প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা appeared first on Sangbad Pratidin.