অভিরূপ দাস: চেয়ার একটাই। তাতে বসবে কে? শনিবার কলকাতা পুরসভার (KMC) অধিবেশনে এই নিয়েই ধুন্ধুমার বেঁধে গেল বিজেপি-তৃণমূলের (BJP-TMC) মধ্যে। যা দেখেশুনে সিপিএম কাউন্সিলররা কটাক্ষের বলছেন, এমনটা তো পাড়ার ক্লাবে হয়!
শনিবার চেয়ার কাণ্ডে জোর তর্ক বিতর্ক শাসক-বিরোধী দু’পক্ষের। শেষমেশ চেয়ারপার্সন মালা রায় আর পুরসভার চিফ হুইপ বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বুঝিয়েসুঝিয়ে ঠান্ডা করেন দু’পক্ষকে। আর গোটা ঝামেলার নেপথ্যে যে, সে বেচারা চুপচাপ। কাঠের হাতলওয়ালা একটা চেয়ার যে! জড় বস্তু।
ফি অধিবেশনের মতোই শনিবার পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের বাঁ দিকের প্রথম সারিতে বসেছিলেন বিরোধীরা। পর পর কংগ্রেসের সন্তোষ পাঠক সিপিএম কাউন্সিলর (Councilor) মধুছন্দা দেব, বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিত। এদিন দুপুর দু’টো চল্লিশ নাগাদ অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন প্রবীণ তৃণমূল কাউন্সিলর শামসুজ্জামান আনসারি। সকলকে হতভম্ব করে দিয়ে গটমট করে হেঁটে মীনাদেবী পুরোহিতের চেয়ারে বসে পড়েন তিনি। টেবিলে তখন বিজেপি কাউন্সিলরের জরুরী কাগজপত্র, ফাইল। সব তিনি সরিয়ে দেন পাশের টেবিলে। শুরু হয় বিজেপি কাউন্সিলরদের চিৎকার চেঁচামেচি। বিজেপি কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ”প্রথমে ভেবেছিলাম উনি (শামসুজ্জামান আনসারি) মজা করছেন। তার পর দেখলাম, এ তো সিরিয়াসলি করছে! এগুলো সহ্য করা যায় না।” মীনাদেবী পুরোহিত প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র। বিজেপি কাউন্সিলরদের উক্তি, ‘‘ন্যূনতম ভদ্রতা নেই তৃণমূল কাউন্সিলরের।’’
[আরও পড়ুন: ‘গয়না, মানিব্যাগ সামলে রাখবেন’, শুভেন্দুকে ‘চোর’ চিহ্নিত করে মাইকিং তৃণমূলের]
যাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীরা অভিযোগ তুলছেন, তিনিও সাতবারের কাউন্সিলর। মেয়র পারিষদের দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। এহেন শামসুজ্জামান আনসারি গোটা ঘটনায় বিস্মিত! সামান্য একটা চেয়ার নিয়ে বিরোধীদের মারমুখী মনোভাব দেখে বাকরুদ্ধ।
প্রবীণ কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘‘প্রত্যেকবার আমি অধিবেশনে এসে ওখানেই বসি। চেয়ারে রিজার্ভড লেখাও আছে।’’ শামসুজ্জামান আনসারির যুক্তি, ‘‘ওটা তো বিজেপি কাউন্সিলরের আসন নয়। আজ আমি বসতেই ওরা হইহল্লা করতে শুরু করল। চেয়ারম্যান আমায় নির্দেশ দিলেন, অন্য জায়গায় বসতে। চলে গেলাম। আমি কি সামান্য চেয়ার নিয়ে ঝগড়া করব?’’
[আরও পড়ুন: ভাঁড়ে মা ভবানী, এবার দেশের নামে চাঁদা চাইবে কংগ্রেস]
যদিও ঝগড়া চেঁচামেচি করেই পুরসভার অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন বিরোধীরা। এদিন বিজেপি কাউন্সিলরদের মৌখিক আক্রমণের প্রতিবাদ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত এবং অসীম বসু। শেষমেশ প্রবীণ শামসুজ্জামান আনসারিকে চেয়ার ছেড়ে দেন অরূপ চক্রবর্তী। চেয়ার কাণ্ড প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ”উনি প্রবীণ মানুষ। বয়সের ভারে নিয়মিত আসতে পারেন না। নিয়মিত যেখানে বসতেন, আজ সেখানেই বসতে গিয়েছিলেন। তার জন্য রে রে করে আক্রমণ করার প্রয়োজন ছিল না।”
দেখুন ভিডিও: