ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিধানসভায় ওয়াকফ সংক্রান্ত আলোচনায় কেন্দ্রকে একের পর এক তিরে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মমতা সাফ বলে দিলেন, ওয়াকফ সংক্রান্ত যে বিল কেন্দ্র এনেছে, সেটা রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই আনা হয়েছে। এটা ফেডারাল স্ট্রাকচারের বিরোধী। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, লোকসভায় ওয়াকফ বিরোধী প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে তৃণমূলই।
রাজ্য বিধানসভায় ওয়াকফ বিল (Waqf Bill) বিরোধী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ওয়াকফ বিল নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা সরকার করেনি। কেন্দ্র যে আইন এনেছে তা লাগু হলে ওয়াকফ ব্যবস্থা ধ্বংস হবে। আমি মনে করি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। কারণ রাজ্যেও ওয়াকফ সম্পত্তি আছে।" মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, "এই বিলের মাধ্যমে একটি ধর্ম কে নির্দিষ্ট করে টার্গেট করা হচ্ছে। এই বিল একটি ধর্মের বিরুদ্ধে। এটা সাম্যের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।"
মুখ্যমন্ত্রী ওয়াকফ বিলের একাধিক ত্রুটি তুলে ধরেন। মমতা বলেন, "এই বিলটির মাধ্যমে ২৬ নম্বর ধারায় প্রদত্ত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার ও ১৪ নম্বর ধারায় সাম্যের অধিকার লঙ্ঘিত করা হয়েছে। এই কারণে আমরা এই বিলটির কঠোর প্রতিবাদ করছি। এই বিল এইভাবে নিয়ে এসে রাজ্য বিধানসভাকেও অপমান করা হয়েছে।" মমতা স্পষ্ট করে বলে দেন, বাংলায় বুলডোজার নীতি চলবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "ওয়াকফ সম্পত্তিতে শুধু মুসলিমরা দান করে, তা নয়। অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও দান করে। অনেক উন্নয়নের কাজ হয়। তাঁদের কি বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে এই বিলে এনে?" আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তি কতটা দখলমুক্ত হয়েছে? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট একটা অর্ডার দিয়েছে। বুলডোজার দিয়ে সম্পত্তি ভাঙা যাবে না। এখানে ওয়াকফ সম্পত্তি দখলমুক্ত করার জন্য বোর্ড নোটিস দিয়েছে ওয়াকফ আইনের আওতায়। ১৫৫ টা কেস হয়েছে। এইগুলো ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।"
ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আবার লোকসভায় তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ঘুরিয়ে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দেন তিনি। তিনি বলেন, "লোকসভায় এটা অনেকে বিরোধিতা করছে অনেকে সমর্থন করছে। সেখানে আমাদের যা সাংসদ সংখ্যা তারা যদি সবাই বিষয়টা তোলে।" সঙ্গে সঙ্গে মমতা বলে দেন, "লোকসভার বিষয় এটা যদিও। তবে কারা কোন দল এটা নিয়ে কী করছে, সেটা তাদের নিজের ইমোশোনের ব্যাপার। এটা নিয়ে তৃণমূল লিড করছে। এইটুকু বললাম। আমি বুলডোজার পাঠিয়ে কারও সম্পত্তি ভেঙে দিতে পারব না।"