নব্যেন্দু হাজরা: মিটারে নয়। এবার থেকে হলুদ ট্যাক্সি (Yellow Taxi) চলবে অ্যাপের মাধ্যমে। স্মার্ট ফোনে আঙুল বুলিয়ে বুক করা যাবে কলকাতার নস্ট্যালজিয়াকে। অ্যাপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘যাত্রী সাথী’। রাজ্য সরকারের তরফে নয়া এই অ্যাপ আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনের হাজারেরও বেশি ট্যাক্সিচালক এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন। এরপর ক্যাবকেও রাজ্য সরকারের এই নয়া অ্যাপের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সূত্রের খবর, আগামী মাসেই বানিজ্যিকভাবে এই সরকারের এই অ্যাপ চালু হয়ে যাবে। একদিকে মিটার ট্যাক্সি যেমন মিটারে চলে না। যেমন খুশি ভাড়া চায়। তেমনই ওলা-উবেরের মতো অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলোও সারচার্জের নাম করে যাত্রীদের পকেট কাটে। আর এই ক্যাব-ট্যাক্সির দৌরাত্ম্য একেবারে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। সেখান থেকে সুরাহা দিতেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে নয়া অ্যাপ ‘যাত্রীসাথী’। যেখানে ভাড়া ওলা-উবেরের থেকে অনেকটাই কম হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা। প্রাথমিক ভাবে হলুদ ট্যাক্সিকে এই সরকারি অ্যাপ ক্যাবের আওতায় সামিল করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মণিপুর ইস্যুতে বিধানসভা অধিবেশনের শুরুতেই নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল]
তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের সোসাইটি ফর ন্যাচারাল ল্যাঙ্গোয়েজ টেকনোলজি রিসার্চ (এসএনএলটিআর) এই নয়া অ্যাপ ক্যাবের ব্যবসা করতে লাইসেন্স নিয়েছে। হাওড়া-শিয়ালদহ সহ অন্যান্য ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে পুলিশই ট্যাক্সিচালকদের ফোনে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে দিচ্ছে। যাদের হাতে স্মার্টফোন নেই, সেই চালকদের গাড়ির নম্বর এবং ফোন নম্বর রেকর্ড করে রাখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাঁদেরকেও এই অ্যাপের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সব ঠিকঠাক চললে অগস্টেই পুরোপুরি বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে চলে আসবে এই ক্যাব। তার আগে অবশ্য পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কলকাতা বিমানবন্দর, হাওড়া, শিয়ালদহ ও কলকাতা রেল স্টেশনে চালু করা হবে পরিষেবা।
[আরও পড়ুন: প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অপহরণ! নাবালিকা মেয়ের খোঁজে হাই কোর্টে বাবা, CID তদন্তের নির্দেশ]
পরিবহণ ও তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, হলুদ ট্যাক্সির পাশাপাশি ওলা, উবরের মতো অ্যাপ ক্যাবগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করাই লক্ষ্য। কারণ শুধু যাত্রী রিফিউজাল নয়, সারচার্জের নামে দিনের বিভিন্ন সময়ে বে-আইনিভাবে ভাড়া বাড়ায় এই সংস্থাগুলি। তাছাড়া এখন বাজারে চলা অ্যাপ ক্যাব নিয়ে যাত্রীদের পাশাপাশি ভাড়া নিয়ে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে গাড়ির মালিকদেরও বিপুল অভিযোগ রয়েছে। অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলির সঙ্গে গাড়ির মালিকদের কোনও চুক্তি না-থাকায় যখন তখন নানা অজুহাতে আইডি বন্ধ করে দেওয়া অভিযোগ ওঠে। একইসঙ্গে যে টাকা ভাড়া থেকে পান চালকরা তার ৩০-৪০ শতাংশ টাকাও কোনও কোনও সময় কেটে নেয় সংস্থাগুলো। তাই পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী আগেই ক্যাব মালিক ও চালকদের সরকারি অ্যাপ চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। তাই এখন বাস্তবায়নের পথে। আর সরকারের এই নয়া উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সিটুও।
সিটুর কলকাতা অ্যাপ ক্যাব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ মনু বলেন, ‘‘সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। নতুন সরকারি অ্যাপ এলে যাত্রীদের পাশাপাশি চালকদেরও অনেক সুবিধা হবে।’’ একই কথা শোনা যায় এআইটিইউসি অনুমোদিত ট্যাক্সি সংগঠনের আহ্বায়ক নওয়ালকিশোর শ্রীবাস্তবের গলাতেও।