স্টাফ রিপোর্টার: কোন পাঠ্যক্রমে হবে প্রাথমিক টেট? প্রশ্নপত্রের ধরন কী রকম হবে? কত নম্বর পেলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যাবে? ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট সংক্রান্ত যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য বিস্তারিতভাবে জানিয়ে গাইডলাইন জারি করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Primary Education)। বুধবার পর্ষদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এই তথ্য সম্বলিত গাইডলাইনটি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দাবি, টেটের ইতিহাসে এই প্রথমবার এই ধরনের গাইডলাইন প্রকাশ করা হল। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের কথায়, ‘‘পরীক্ষার পাঠ্যক্রম, নমুনা প্রশ্নপত্র এবং টেট সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে এই গাইডলাইনে। গোড়া থেকেই স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে টেটের ইতিহাসে এই প্রথমবার এধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’
চলতি বছর ১১ ডিসেম্বর বেলা ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে প্রাথমিক টেট। আড়াই ঘণ্টার পরীক্ষাটি মোট ১৫০ নম্বরে হবে। পর্ষদ প্রকাশিত গাইডলাইন অনুযায়ী, এমসিকিউ প্রশ্নের ভিত্তিতে হবে হবে গোটা পরীক্ষাটি। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর। অর্থাৎ, ১৫০ নম্বরের জন্য ১৫০টি MCQ প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য থাকবে চারটি করে বিকল্প উত্তর। তার মধ্যে থেকে বেছে নিতে হবে সঠিক উত্তরটি।
[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রোগীকে মুসম্বির জুস, বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে যোগীরাজ্যের হাসপাতাল]
মোট পাঁচটি বিষয়ের উপর ১৫০টি প্রশ্ন থাকবে। তার মধ্যে ৩০টি প্রশ্ন শিশু বিকাশ ও শিক্ষাবিদ্যা (Child Development and Pedagogy) থেকে করা হবে। একইভাবে প্রথম ভাষা তথা বাংলা, হিন্দি, উড়িয়া, তেলেগু, নেপালি, সাঁওতালি বা উর্দু থেকে ৩০টি, দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি থেকে ৩০টি, গণিত থেকে ৩০টি এবং পরিবেশ বিজ্ঞান থেকে ৩০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ধরন এবং মান কীরকম হবে তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফে। যেমন, প্রথম ভাষার ক্ষেত্রে নির্বাচিত ভাষা মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর দক্ষতা কতটা তা যাচাইয়ের দিকে নজর দিয়ে প্রশ্ন করা হবে। প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত পাঠ্যক্রমও দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র কেমন হবে, তা নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একটা সম্যক ধারণা তৈরি করতে মডেল তথা নমুনা প্রশ্নপত্রও দেওয়া হয়েছে গাইডলাইনে।
পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক টেটে (Primary TET) কোনও নেগেটিভ মার্কিং করা হবে না। অর্থাৎ, কোনও প্রশ্নের ভুল উত্তর দিলে নম্বর কাটা হবে না। বাংলা এবং ইংরেজি, এই দু’টি ভাষায় হবে প্রশ্নপত্র। পরীক্ষায় ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের টেট উত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করা হবে। সংরক্ষিত ক্যাটাগরির প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় থাকবে। অর্থাৎ, ৫৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলেই টেট উত্তীর্ণ হবেন তাঁরা। সব ক্যাটাগরির ক্ষেত্রেই টেট সার্টিফিকেটের মেয়াদ সারাজীবন থাকবে। টেট সার্টিফিকেটের জন্য একজন প্রার্থী যতবার ইচ্ছে ততবার টেটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। নিজের স্কোর আরও ভাল করার লক্ষ্যে ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণ কোনও প্রার্থী চাইলে ভবিষ্যতে আবার টেটে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস সভাপতির পদে শপথ খাড়গের, তবু অনুষ্ঠানে উচ্ছ্বাস গান্ধীদের ঘিরেই]
তবে, টেট উত্তীর্ণ হওয়া মানেই চাকরির অধিকার অর্জন করা নয়। সেই সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে গাইডলাইনে। বলা হয়েছে, টেটে উত্তীর্ণ হলেই কোনও প্রার্থীর নিয়োগ পাওয়ার অধিকার জন্মাবে না। এটা নিয়োগের যোগ্যতামানগুলির মধ্যে একটি। এছাড়া, পরীক্ষার কিছু নিয়মাবলী সম্পর্কে জানানো হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। যেমন, কোনও পরীক্ষার্থীকে বৈধ অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কোনও অবস্থাতেই যেন সেন্টার সুপারিটেন্ডেন্ট/সেন্টার ইন-চার্জ যেন নিয়মবিরুদ্ধ সেই কাজ না করেন তা নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে।