সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া এত বিল রাজভবনে কেন আটকে? সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই চাপ বাড়ানো শুরু করে রাজ্য সরকার। খোদ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে তাঁর 'কর্তব্য' মনে করিয়ে বিলগুলি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানান। রাজ্যের সেই চাপের মুখে এবার বিবৃতি দিয়ে বিলগুলি নিয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করল রাজভবন। বুধবার রাতে দু’টি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে রাজভবন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল সংবিধান অনুযায়ী শিষ্টাচার মেনেই চলছেন।

বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত হয়েছেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল। শীর্ষ আদালত সাফ বলে দিচ্ছে, রাজভবনে এভাবে বিল আটকে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল। সুপ্রিম কোর্টের সেই পর্যবেক্ষণের পর রাজভবনের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিকার মনে করিয়ে দেন, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের এখনও পর্যন্ত ২৩টি বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে। রাজ্যপালের এ দিকে নজর দেওয়া উচিত। যদি বিলে কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকেই থাকে, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের অ্যাডভোকট জেনারেলের পরামর্শ তিনি নিতে পারেন। রাজভবনে যে বিলগুলি আটকে রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, গণপিটুনি সংক্রান্ত বিল, হাওড়া ও বালি পুরসভাকে একত্রিত করা সংক্রান্ত বিল, মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা সংক্রান্ত আটটি বিল। এবং মহাগুরুত্বপূর্ণ অপরাজিতা বিল।
বুধবার রাতে জোড়া বিবৃতিতে এই বিলগুলি নিয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করল রাজভবন। বিবৃতিতে রাজ্য বা স্পিকার কারও নাম উল্লেখ করেনি রাজভবন। তবে ওই বিবৃতিগুলি যে স্পিকারের চাপ সৃষ্টির কৌশলের পালটা সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজভবনের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, যে বিলগুলি আটকে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে এখনও পূর্ণাঙ্গ তথ্য রাজভবন পায়নি। রাজভবনের দাবি, ২০২৩ সালে জানানো হয়েছিল যে মোট ২২টি বিল নাকি রাজভবনে আটকে রয়েছে। সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ওই বিলগুলি মধ্যে পাঁচটিতে ইতিমধ্যে রাজ্যপাল সায় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজভবন। কয়েকটি বিল নিয়ে আরও তথ্য তলব করা হয়েছে।
রাজভবনের দাবি, ওই বিলগুলির মধ্যে ১১টি বিল রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছেন। যার মধ্যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত। এবং এগারো নম্বরটি অপরাজিতা বিল। যা আরজি কর কাণ্ডের পর ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় কড়া শাস্তি দিতে পাশ করিয়েছিল রাজ্য সরকার। আর হাওড়া পুরসভা ও গণপিটুনি-সহ একাধিক বিলে সম্মতি না দিতে পারার জন্য ঘুরিয়ে নবান্নকেই দায়ী করেছে রাজভবন। রাজ্যপালের বক্তব্য, ওই বিলগুলি নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কিছু তথ্য তলব করেছে রাজভবন। কিন্তু এখনও 'উপযুক্ত' জবাব আসেনি।