সুব্রত বিশ্বাস: গঙ্গাসাগর তীর্থযাত্রীদের এবার কোভিড পরীক্ষা দিয়ে তবেই ট্রেনে চড়তে হবে। এজন্য শিয়ালদহ স্টেশনে কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। কোভিড (COVID-19) প্রোটোকল রাজ্যের আওতায় হওয়ায় রেলের কাছে ঘর চেয়েছে কেন্দ্র। শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং জানান, কোভিডবিধি রক্ষার সব দায়িত্ব মেনে চলা হবে। ব়্যাপিড টেস্টে উত্তীর্ণদের ট্রেনে চড়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
সোমবার নবান্নে রেলকর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠকের পর প্রস্তুতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিয়ালদহ, নামখানা, কাকদ্বীপ তিন জায়গাতেই শরীরের তাপমাত্রা নেওয়া হবে। থাকবে আইসোলেশন সেন্টার। সন্দেহজনক হলেই পাঠানো হবে হাসপাতালে। এজন্য তিন জায়গাতেই অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। এদিন রেলের তরফে নামখানা, কাকদ্বীপ ঘুরে দেখেন এডিআরএম এসএস প্রিয়দর্শী। তিনি বলেন, “তীর্থযাত্রীদের ভিড় তো হবেই। তাই টিকিট কাটতে যাতে দীর্ঘ সময় দাঁড়াতে না হয় সেজন্য নামখানায় দু’টি ও কাকদ্বীপে বাড়তি তিনটি বুকিং কাউন্টার খোলা হবে। দু’টি স্টেশনের ভিতর ও বাইরে বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিছন্নতার জন্য বাড়তি সাফাই কর্মী সেখানে মোতায়েন করা হচ্ছে। অস্থায়ী সহায়তা কেন্দ্রও তৈরি করা হচ্ছে। থাকবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী।
[আরও পড়ুন: বেলগাছিয়া থেকে হেরোইন, ইয়াবা-সহ ২২ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করল পুলিশ]
তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মটি ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত নামখানা, কাকদ্বীপের ট্রেনের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। ১০ থেকে ১৩ জানুয়ারি শুধু ডাউনের ট্রেনগুলি যাবে। ১৩ থেকে ১৬ তারিখ শিয়ালদহগামী (Sealdah) ট্রেনগুলি ঢুকবে। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মটি চওড়া হওয়ায় এবং হকার না থাকায় তীর্থযাত্রীদের সুবিধা হবে। তাঁরা সরাসরি স্টেশনে যেতে পারবেন। রেল জানিয়েছে, ভিনরাজ্যের বহু তীর্থযাত্রী আসবেন। ডিআরএম জানান, নামখানা, কাকদ্বীপ শাখায় বাড়তি আরও ১৫টি ট্রেন চলবে আগামী ৭ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখন দৈনিক ৮৪টি ট্রেন চলছে। মেলার (Ganga Sagar Mela) সময়ে দৈনিক ৯৯টি ট্রেন চলবে।
এই সময়ে অপরাধীদের ভিড় বাড়ে। সঙ্গে বাড়ে চোর, ছিনতাইকারীদের ভিড়। রেল পুলিশের ডিএসপি নরেন্দ্রনাথ দত্ত জানান, বাড়তি ফোর্সের পাশাপাশি ১০০ হোমগার্ড নিয়োগ হচ্ছে। আরপিএফ, জিআরপির যৌথ তল্লাশির সঙ্গে আন্টি সাবতাজ ও সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে। মেলা কেন্দ্রিক স্টেশনগুলিতে পুলিশ আধিকারিকরা থাকবেন তদারকির জন্য। ১৫ জানুয়ারি পূণ্যস্নানের দিন। তার আগে ও পরে ভিড় বেশি থাকবে ট্রেন ও স্টেশনে। ফলে ওই সময়ে সতর্কতা বাড়ানো হবে।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর সভার পরই রণক্ষেত্র কাঁথি, বিজেপির মহিলা কর্মীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ]
সাধারণ ট্রেন না চলায় তীর্থযাত্রীর সংখ্যা হাওড়ায় কম হবে, এমনটাই আশা করছে রেল। তবে প্রশাসনের তরফে সব ব্যবস্থা থাকছে। রেল পুলিশ সুপার পঙ্কজ দ্বিবেদী জানান, অপরাধ দমন শাখা, বোম্ব স্কোয়াড, সাদা পোশাকের পুলিশের পাশাপাশি নিউ এবং ওল্ড দুটি স্টেশনে হেল্প ডেস্ক থাকবে। তীর্থযাত্রীদের অনেকেরই হারিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এঁদের খুঁজে বের করা ও খুঁজে পাওয়াদের এক যায়গায় রাখার ব্যবস্থা ও সহযোগিতার জন্য অ্যাড্রেস সিস্টেমে ঘোষণার পাশাপাশি সিসিটিভিতে নজর রাখা হবে। কলকাতা স্টেশনেও সহযোগী বুথ তৈরি থাকবে। থাকবে কোভিড বিধির ব্যবস্থা।