অভিরূপ দাস: ইউটিউবের ভিডিও স্ক্রিনে খিস্তির খই ফোটালেও গারদের আড়ালে বেবাক চুপ মেরে গিয়েছেন রোদ্দুর রায় (Roddur Roy)। অন্তত লালবাজার পুলিশ সূত্রে খবর এমনটাই। এই সেদিনও যিনি খিস্তি খেউড় করে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন, মুখ খুলেই বেরিয়ে আসছিল বাছা বাছা গালিগালাজ, লালবাজার গুন্ডাদমন শাখার সামনে তিনিই একদম হিমশীতল ঠান্ডা, চুপচাপ, নিস্তব্ধ।
জিজ্ঞাসাবাদকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, কি সেন্ট্রাল লকআপ, কি জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনও খারাপ কথাই বলছেন না রোদ্দুর রায়। শুধু বোঝাচ্ছেন মোক্সাবাদ! লকআপে তিনি স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করছেন। মাঝে মধ্যেই একটানা বিড়বিড় করে কীসব আওড়াচ্ছেন। রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ৪১৭, ১৫৩, ৫০১, ৫০৪, ৫০৫ এবং ৫০৯ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পরে সংযুক্ত হয়েছে ১৫৩এ, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৬৯ ধারা। অর্থাৎ মোক্সা তত্ত্বের প্রবক্তার বিরুদ্ধে মানহানি, অশালীন এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা ছাড়াও, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ঘৃণা প্রদর্শন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সস্তায় বিমানের টিকিট কাটতে চান? শিখে নিন ৬টি কৌশল]
এই সমস্ত মামলার তদন্তে আপাতত ডিডি বিল্ডিংয়ে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রাত কাটছে লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপে। কেমন হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ? সূত্রের খবর, রোদ্দুর রায়ের কুৎসিত ভিডিও তাঁকেই দেখাচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জিজ্ঞেস করছেন, কেন এমন ভাষায় তিনি ভিডিও বানিয়েছিলেন? উত্তরে রোদ্দুর রায়ের মুখে এক কথা, “জয় মোক্সা।” কী এই মোক্সা? তা বুঝতেই কালঘাম ছুটছে পুলিশের। জিজ্ঞাসাবাদকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, মোক্সাবাদ বোঝাতে রোদ্দুর রায় যা বলছেন তার মাথামুন্ডু কিস্যু বোঝা যাচ্ছে না। নিজের মতো করে তিনি গড়গড় করে বলে চলেছেন।
একাধিক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই উলটোপালটা বকে চলেছেন রোদ্দুর। তবে পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেছেন, ওইসব ভিডিও তাঁরই বানানো। কিন্তু সেসময় তিনি আর অনির্বাণ রায় থাকেন না। রোদ্দুর রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এমন কথা কিম্ভুত কিমাকার ঠেকছে পুলিশের কাছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার গোয়া থেকে ফেরার পর লালবাজারের লক আপে ছিলেন রোদ্দুর। এরপর ব্যাঙ্কশাল আদালতে আনা হয় রোদ্দুরকে। আদালতের বাইরে রোদ্দুরের সমর্থনে ভিড় করেছিলেন প্রচুর সমর্থক। অনেকেই ঘুরঘুর করছেন লালবাজারের বাইরেও। কেউ যাতে আচমকা প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য কড়া প্রহরা রেখেছে গুন্ডাদমন শাখা।