দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কথায় বলে মেয়েরা মায়ের জাত। তাই তো নিজের হোক কিংবা অন্য কারও সন্তানকে চোখের সামনে কাঁদতে দেখলে নিজেদের সামলে রাখতে পারেন না তাঁরা। সেই আপ্তবাক্যকেই বাস্তবে রূপ দিলেন চিকিৎসক (Doctor) চিত্রালেখা সর্দার।
বারুইপুরের (Baruipur) চম্পাহাটির বাড়িতে আট মাসের সন্তানকে রেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত ব্লক কুলতলিতে চিকিৎসা করেন ওই চিকিৎসক। দুধের শিশুকে বাড়িতে রেখে সোমবার থেকে টানা ডিউটি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কখনও কুলতলির জামতলা হাসপাতালে আবার কখনও করোনার সেফ হোমে। দুধের শিশুকে বাড়িতে রেখে যাওয়ায় স্তন্যদান করাতে পারেন না। মনখারাপ হলেও দায়িত্বে অবিচল চিকিৎসক।
[আরও পড়ুন: ফরাক্কায় স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম জমা দেওয়ার লাইনে হুড়োহুড়ি, পদপিষ্ট হয়ে হাসপাতালে ভরতি ৩ জন]
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে তিনটি নবজাতক শিশুর জন্ম হয়। আর তাদের মায়েরা সদ্যোজাতদের সেই সময় দুধ পান করাতে পারছিলেন না। তার ফলে খিদের জ্বালায় কাঁদতে শুরু করে নবজাতকরা। তাদের কান্নায় আর থেমে থাকতে পারেননি স্বয়ং চিকিৎসক। বুধবার সকালে একে একে পরপর তিন শিশুকে স্তন্যদান করেন তিনি। চিকিৎসক বলেন, “বাড়িতে আমার ছোট্ট সন্তান আছে। সেও তিনদিন ধরে দুধের জন্য কান্নাকাটি করছে। হাসপাতালে করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতি এবং শিশু নিয়ে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় তাকে বাড়িতে রেখে এসেছি। শিশু দুধ না পেলে খিদের জন্য কষ্ট পায়, কান্নাকাটি করে, সেটা আমি বুঝি। সেই উপলব্ধি থেকেই সদ্য জন্মানো শিশুদেরকে স্তন্যদান করেছি। কারণ আগে আমি মা। তারপর একজন চিকিৎসক।” চিকিৎসকের মহানুভবতা মন ছুঁয়েছে তিন সদ্যোজাতর পরিজনদেরও। তাঁকে নিয়েই এখন আলোচনা চলছে সর্বত্র। সত্যিই মেয়েরা মায়ের জাত, তাই যেন আরও একবার প্রমাণ করলেন চিকিৎসক চিত্রালেখা।