গোবিন্দ রায়: কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করা যাবে না, এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ আইনজীবী আবু সোহেল। মামলাকারীর দাবি, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তিনি অন্যতম পক্ষ। তাঁর বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। এই মর্মে ওই আইনজীবীকে মামলা করা অনুমতি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মোট ২৬ টি এফআইআর রয়েছে বিভিন্ন থানায়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, দলবদলের কারণে প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। পরিকল্পনা মাফিক একের পর এক মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। যার অধিকাংশই ভিত্তিহীন। সেই কারণে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া সমস্ত মামলা খারিজের আবেদন করেন। অন্যথায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না’, বিজেপির ‘ডিসেম্বর হুঁশিয়ারি’ নিয়ে মন্তব্য পার্থর]
সেই মামলায় বিচারপতি রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, শুভেন্দু অধিকারী একটা সময়ে তৃণমূলে ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিরোধী দলেনতা। মানুষের ভোটে নির্বাচিত। ফলে পুলিশ নিজে অথবা অন্য কারও নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতার কাজ স্তব্ধ করার চেষ্টাও করতে পারে। সেই কারণেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ২৬টি এফআইআরেই অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। তবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেননি বিচারপতি। হাই কোর্টের রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এত এফআইআর দায়ের নিয়ে বিস্ময় প্রকাশও করেন বিচারপতি। এবিষয়ে রাজ্যের কাছে হলফনামা চায় হাই কোর্ট।
এরপর হাই কোর্টে বড় স্বস্তি পান শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও নতুন FIR করা যাবে না। এমনই নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ আইনজীবী আবু সোহেল। ডিভিশন বেঞ্চ কী রায় দেয়, সেটাই এখন দেখার। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা যায় না। যদি কেউ বারবার রক্ষাকবচ পান তাতে খটকা লাগে। আমাদের পূর্ণ সম্মান আছে আইনে। কিন্তু যখন আমরা বলি কোর্টে দেখা হবে। একমাত্র শুভেন্দুকে দেখেছি রাজাশেখর মান্থার কাছে যাব বলেন। মানসিক কোন অবস্থায় থাকলে এরকম হয়? কারও নামে আমি কিছু বলছি না। মহামান্য বিচারপতিকে বলব, সুরক্ষা দিচ্ছেন আপনার ব্যাপার। কিন্তু যাকে সুরক্ষা দিচ্ছেন তিনি তো বাইরে বেরিয়ে হিন্দু-মুসলমান করছেন। আইপিএস, আইএএসদের হুমকি দিচ্ছেন। রক্ষাকবচ নিয়ে কি এগুলো করা যায়? মুখে লাগাম দেওয়ার কাজটা তাহলে কে করবে? সেই কাজটাও তো আপনাকে করতে হবে”