সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দুর্গার পর লক্ষ্মীপুজোতেও ফুলের দাম আকাশছোঁয়া। ফুলের বাজার রীতিমতো আগুন। ফি বছরই রাজ্যে বন্যা ও বর্ষণজনিত কারণে দুর্গাপুজোয় ফুলের দাম চড়া থাকে। লক্ষ্মীপুজোতেও তার প্রভাব পড়ে। কিন্তু এবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় ফুলে হাত দিতে গেলে কার্যত ছ্যাঁকা লাগছে। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনই কলকাতার মল্লিকঘাট ফুল বাজার-সহ রাজ্যের বিভিন্ন ফুল মার্কেটে এক একটি পদ্ম বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবে শনিবার লক্ষ্মীপুজোয় পদ্মের দাম আরও বাড়বে। বাড়বে অন্যান্য ফুলের দামও। কারণ নবমী থেকে মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ফুলের ফলন ব্যাহত হয়।
এছাড়া সম্প্রতি নিম্নচাপজনিত বর্ষণে রাজ্যের ফুলচাষ ক্ষতির মুখে পড়ে। বিশেষ করে পূর্ব
মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেই কারণেই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোতেও ফুলের দাম এমন চড়া। এদিন মল্লিকঘাট ফুল বাজার সহ বিভিন্ন জেলায় রজনীগন্ধা ৩৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বেল ৯০০ টাকা, জুঁই ১১০০ টাকা, দোপাটি ২০০ টাকা, অপরাজিতা ৩০০ টাকা, লাল গাঁদা ৮০ টাকা, হলুদ গাঁদা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া জবা ৭০ পয়সা, গোলাপ ৬ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে। তিন ফুট সাইজের লাল গাঁদার মালা ২৫ টাকা, হলুদ গাঁদার মালা ৩৫ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তুচ্ছ ধর্মবৈষম্য, মথুরাপুরে সম্প্রীতির ‘কোজাগরী উৎসবে’র জোর প্রস্তুতি]
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, “নিম্নচাপজনিত বর্ষণ, সেই সঙ্গে বর্ষার সময় প্রচণ্ড গরম। তারপর নবমী থেকে মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ফুলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যেসব জেলায় ফুল চাষ হয় সেই জেলাগুলিতে টানা বর্ষণের কারণে ফুলবাগানে জল জমে ফুলের চাষ ভীষণভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। সে কারণেই এবার ফুলের বাজার এই জায়গায় পৌঁছেছে।” কালীপুজো পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকবে বলে আশঙ্কা সারা বাংলা ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির। শনিবার ফুলের দাম আরও বাড়তে পারে। তাই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করা গৃহস্থের মানুষজন এদিন দুপুরেই ফুল কিনে রাখেন। বিশেষ করে লাল ও হলুদ গাঁদার মালা আগেভাগেই সংগ্রহ করে রাখেন। সেই সঙ্গে পদ্মফুলও।