সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিন্ন সোমবার। রবিবারের প্রথমার্ধ্বেও তিনি ছিলেন বর্তমান। এখন অতীতের খাতায়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chattejee) নামের পাশে লেখা ১৯৩৫-২০২০। এখন স্মৃতিই সম্পদ। যে স্মৃতি তিনি রেখে গিয়েছেন নিজের অভিনয়, কবিতা, নাটক, আবৃত্তির মধ্যে। আর অনমনীয় এক ব্যক্তিত্বের মধ্যে। এই ব্যক্তিত্বের জোরেই অনায়াসে ‘পদ্মশ্রী’র মতো সম্মানও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
১৯৭০ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে পদ্মশ্রী (Padma Shri) সম্মান দিতে চেয়েছিল তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধীর (Indira Gandhi) নেতৃত্বাধীন সরকার। তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা। পরে এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাকি জানিয়েছিলেন, সেই সময় ভারতীয় চলচ্চিত্রের উন্নতির জন্য কিছুই করছিল না সরকার। তাই ব্যক্তি হিসেবে এই পুরস্কার তাঁর পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। পরে ২০০৪ সালে পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) সম্মান গ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ২০১২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে নিজের অবদানের জন্য দাদা সাহেব ফালকে (Dadasaheb Phalke Award) পুরস্কার পান।
[আরও পড়ুন: বাড়ির আউট হাউসকেই স্টুডিও বানিয়ে ফেলেন সৌমিত্র, শেষ জীবনে এঁকেছিলেন একাধিক ছবি]
বাংলার এই প্রবাদপ্রতীম শিল্পীকে সর্বোচ্চ দুই সম্মান দিয়েছে ফ্রান্স। ১৯৯৯ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় গ্রহণ করেন ‘অফিসিয়ের দে আর্টস এ মেটিয়ার্স’ (Officier des Arts et Metiers’)। সেদেশের শিল্পক্ষেত্রের সর্বোচ্চ সম্মান। এরপরই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘লিজিয়ঁ অফ অনার’ (Legion of Honor) সম্মানে ভূষিত করে ফ্রান্স সরকার। ‘ভারতরত্ন’-এর সমতুল্য ফ্রান্সের এই সম্মান। ২০১৮ সালে এই সম্মান পেয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, “এই বয়সে পুরস্কারের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ নেই। তবে শিল্প ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ এক জায়গা থেকে আসা এই সম্মানকে একটু বিশেষই বলব।”
রবিবার ১২.১৫ মিনিট নাগাদ বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবাদপ্রতীম শিল্পী। বাংলার শেষ ম্যাটিনি আইডলের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ স্টুডিওপাড়া। সোমবার সমস্ত শুটিং বন্ধ। ‘বাপি’র মৃত্যুতে শোকবিহ্বল কন্যা পৌলমী বসু (Poulami Bose)। ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, পুরো পরিবার বিধ্বস্ত। এই সময় কেউ যেন সমবেদনা জানাতে তাঁদের বাড়ি না যান। পৌলমী বসুর মা ও ছেলের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। সেই কারণেই এই অতিমারী পরিস্থিতিতে সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ জানিয়েছেন সৌমিত্রকন্যা। এই সময় তাঁকে যেন কেউ ফোন বা মেসেজ না করেন। কারণ নিজেকে সামলাতে পৌলমীর সময় প্রয়োজন।