রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ‘মানুষখেকো’ চিতাবাঘ নিয়ে রহস্য আরও বাড়ল। বুধবার সন্ধেয় ওই চিতাবাঘ একটি কুকুর টেনে নিয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীদের। রবিবার বৃদ্ধার মুণ্ড উদ্ধারের পর বিড়াল টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাতেও নাম জুড়েছে চিতাবাঘের। আবার স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, কয়েকদিন আগে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন দাদু ও নাতি। বুধবার সন্ধেয় একই এলাকার কিছুটা দূরে শিশুবাড়ি সরুগাও এলাকায় চিতাবাঘ একটি কুকুর ধরে নিয়ে গিয়েছে বলেই দাবি গ্রামবাসীদের। বনদপ্তর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সরুগাও এলাকাতেও বৃহস্পতিবার সকালে একটি খাঁচা পেতেছে বনদপ্তর। ওই এলাকায় চিতাবাঘের পায়ের ছাপও পাওয়া গিয়েছে। তবে রবিবার বৃদ্ধা খুনের ঘটনাস্থলে পাওয়া চিতাবাঘের পায়ের ছাপের তুলনায় সরুগাওতে পাওয়া চিতাবাঘের পায়ের ছাপ অনেক ছোট বলে জানাচ্ছে বনদপ্তর। তাহলে কী বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষের রক্তের স্বাদ পাওয়া সেই চিতাবাঘ? নাকি এলাকায় আরও চিতাবাঘের উপস্থিতি রয়েছে। সবটা নিয়েই রহস্য দানা বাঁধছে। জলপাইগুড়ি বনদপ্তরের দলগাঁও রেঞ্জের ডেপুটি রেঞ্জার প্রীতম রায় বলেন, “যেহেতু চিতাবাঘটিকে সরাসরি আমরা দেখতে পাচ্ছি না সে কারণে তার গতিবিধি নিয়ে নানা রহস্য রয়েছে। যে কোনও জায়গায় চিতাবাঘটিকে দেখতে পেলে প্রয়োজনে জাল দিয়ে ওই এলাকা ঘিরে আমরা অন্যরকম ব্যবস্থা নিতে পারতাম। কিন্তু এই অবস্থায় ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা ছাড়া আমাদের আর অন্য কোনও উপায় নেই। দিনরাত এলাকায় আমরা টহল দিচ্ছি।”
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ার ডাকাতিতে পৃথক গ্যাং, নেই রানাঘাট-যোগ, তদন্তে মিলল নয়া তথ্য]
বুধবার যে দু’টি ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল সেখানে চিতাবাঘের কোনও গতিবিধি ধরা পড়েনি। বৃহস্পতিবার আরও দুটো ক্যামেরা বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছুতেই চিতাবাঘের হদিশ পাচ্ছে না বনদপ্তর। সরুগাও এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ রায় বলেন, “রবিবার এক বৃদ্ধাকে মেরে ফেলেছে চিতাবাঘটি। মঙ্গলবার তাসাটি চাবাগানে চিতাবাঘটি একটি বিড়াল টেনে নিয়ে গিয়েছে। বুধবার সন্ধেয় আমাদের এলাকায় একটি কুকুর টেনে নিয়ে গেল। এভাবে আবার কোনদিন মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি তার বিশ্বাস নেই। বনদপ্তরকে কোনও ব্যবস্থা করতে হবে। দিনের বেলা অতটা ভয় নেই। কিন্তু সন্ধের পর থেকে আমরা ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকছি। কিন্তু নানা কারণে ঘরের বাইরে আসতে হয়ই। এখন শুধু ভগবানে ভরসা রেখেছি আমরা।” সবমিলিয়ে এখন চিতাবাঘের আতঙ্কে জবুথবু জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা।