সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১২ ঘণ্টা টানা কাজ, খাওয়ার সময় নেই, লক্ষ্যপূরণ না হওয়া পর্যন্ত নেই কোনও বিশ্রাম। চাকরির নামে কম্বোডিয়াতে সাইবার ক্রীতদাস বানানো হয়েছিল ৫ হাজার ভারতীয়কে। তাঁদেরকে কাজে লাগানো হয়েছিল ভারতীয়দের (Indians) সঙ্গেই সাইবার প্রতারণা করতে। গুরুতর এই অভিযোগ পেয়ে তৎপর হয়েছিল দেশের বিদেশমন্ত্রক (Ministry of External Affairs)। অবশেষে কম্বোডিয়ার ‘নরক’ থেকে ২৫০ ভারতীয়কে উদ্ধার করল ভারত সরকার।
শনিবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, চাকরির নামে যে সব ভারতীয়দের কম্বোডিয়ায় (Cambodia) নিয়ে এসে অবৈধ কাজ করানো হচ্ছে তাঁদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। এখনও পর্যন্ত ২৫০ ভারতীয়কে উদ্ধার করে দেশে ফেরানো হয়েছে। গোটা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এই ধরনের অপরাধ থেকে বাঁচতে বিদেশমন্ত্রক ও কম্বোডিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের তরফে ভারতীয়দের জন্য বেশকিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যারা সাহয্যপ্রার্থী আমরা সেই সকল ভারতীয়দের সাহায্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়তে দেশের এজেন্সিগুলির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
[আরও পডুন: ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ না হলে ৪০০ পার হবে না, ভোটে কারচুপি নিয়ে মোদিকে তোপ রাহুলের]
জানা গিয়েছে, ডেটা এন্ট্রির কাজ দেওয়ার নামে প্রচুর ভারতীয় নাগরিককে টোপ দিয়ে কম্বোডিয়ায় পাঠায় দেশেরই কিছু অবৈধ এজেন্সি। লোভনীয় চাকরির আশায় ফাঁদে পা দিতেই ঘনায় বিপর্যয়। কম্বোডিয়ায় গিয়ে কার্যত ক্রীতদাস হয়ে থাকতে হয় ওই ভারতীয়দের। দেশের নাগরিকদের সাইবার প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা লোপাট করানো হত তাঁদের দিয়ে। গত ৬ মাসে ওই ভারতীয়দের দিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা প্রতারণা করানো হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রেও ছিল কড়া বিধিনিষেধ। ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হত ওই ভারতীয়দের। টার্গেট পূরণ না হলে মিলত না খাওয়া কিংবা বিশ্রামের সুযোগ। দিনের পর দিন এভাবেই চলত নির্যাতন। যাতে তারা কাজ ছেড়ে যেতে না পারেন তার জন্য কেড়ে নেওয়া হত পাসপোর্ট।
[আরও পডুন: নিঃসন্তান মহিলাকে দিনরাত গঞ্জনা! শাশুড়িকে ‘খুন’ করে আত্মসমর্পণ গৃহবধূর]
সংবাদমাধ্যমের দৌলতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। কম্বোডিয়া প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে এই সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে শুরু হয় অভিযান। পাশাপাশি সেখানে আটকে পড়া ২৫০ জনকে উদ্ধার করল বিদেশমন্ত্রক। রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সম্প্রতি ভারতীয়দের উদ্ধারে বিদেশমন্ত্রক, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক, ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার এবং অন্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে সংগঠিত র্যাকেট এবং আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার কৌশল নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।