সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চোখ রাঙাচ্ছে চিনা ভাইরাস। ফের কোভিডের মতো লকডাউনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেসবের আগেই ব্যস্ত জীবন থেকে দিন পাঁচেক সময় বের করে সোজা চলে যান জংগুতে। পাহাড়ি বেশ কিছু জায়গা আজও প্রচারের আড়ালেই রয়ে গিয়েছে। নৈসর্গিক দৃশ্যের অধিকারী হলেও একমাত্র সেরকম ভ্রমণপিপাসু না হলে পর্যটকরা খুব একটা ভিড় জমান না সেসব জায়গায়। সেরকমই এক জায়গা জংগু। সিকিমে বাঁকে-বাঁকে অফবিট লোকেশন যারা খোঁজ করে থাকেন তাদের জন্য এক আদর্শ ডেস্টিনেশন হল জংগু (Dzongu, Sikkim)। উত্তর সিকিমের আদি বাসিন্দা লেপচাদের গ্রাম এটি।
জংগুর দক্ষিণ-পূর্বে তিস্তা নদী, উত্তর-পূর্বে থোলং চু নদী এবং পশ্চিমে বরফ ঢাকা হিমালয়। ১৯৬০ সাল থেকে এই জায়গা লেপচা উপজাতির জন্য নির্দিষ্ট। এটাই সম্ভবত সেই শেষ জায়গা যেখানে লেপচা ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি আজও অনুসরণ করা হয়। বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম যেটুকু প্রয়োজন, সেইটুকুই তাদের চাহিদা। এলাচ, কমলালেবু, ভুট্টা, বাজরা, ধান চাষ হয়। এখানকার জৈব খাবার সত্যিই খুব সুন্দর। জংগুর হোমস্টেগুলিতে উষ্ম আতিথিয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবে। একবার গেলে ফিরতে ইচ্ছে করবে না। পাশাপাশি রয়েছে বরফঢাকা হিমালয়। এখানে কিন্তু প্রজাপতি এবং পাখির সমাহার। প্রকৃতি যেন নিজস্ব ক্যানভাসে রঙিন করে সাজিয়েছে জংগুকে। চোখ ভরে দেখলে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, জংগু গেলে চি খাওয়া মাস্ট! চি এখানকার পানীয়। মিলেটের সঙ্গে গরমজল মিশিয়ে পরিবেশন করা হয় বাঁশের গ্লাসে। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই কাঞ্চনজঙ্ঘাকে নিবেদন করবেন কারণ এটাই রীতি। ছোট্ট ছবির মতো সাজানো লেপচা গ্রাম। যেখানে নানারকম হিমালয়ান বার্ডের দেখা মেলে। পারলে শুধু জংগুতেই কয়েকটা দিন কাটিয়ে যান।
কী কী দেখবেন? থোলুং চু নদী, থোলুং মনাস্ট্রি, লিংজে ওয়াটার ফল, হট স্প্রিং, লেপচাদের তৈরি ট্র্যাডিশনাল ব্যাম্বু ব্রিজ। কীভাবে যাবেন? নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সিংতাম হয়ে জংগু যাওয়া যায়। সময় লাগে প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা। গাড়ি বুক করে যেতে পারেন নতুবা শেয়ার গাড়িতেও। গ্যাংটক থেকে মঙ্গন হয়েও জংগু যাওয়া যায়। মঙ্গন থেকেও শেয়ার গাড়ি পাবেন। সময় লাগবে ২ ঘণ্টা। তবে জংগু যেতে গেলে মঙ্গন থেকে স্পেশাল পারমিট আবশ্যিক। সেই ছাড়পত্র ছাড়া আপনি জংগুতে ঢুকতে পারবেন না। খরচাও পকেট ফ্রেন্ডলি। জনপিছু ২০০০ টাকা নিত্যদিন সব মিল মিলিয়ে। যাতায়াত আলাদা।