স্টাফ রিপোর্টার: অধিকাংশ প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ। আর সকলের মতো ঘুরতে গিয়েছে চিকিৎসকদের একাংশ। ভরসা শুধু সরকারি হাসপাতাল। তাও তো সবার বাড়ির দোরগোড়ায় নয়। হঠাৎ যদি বুকে ব্যথা ওঠে? হাবিজাবি খেয়ে পেট মোচড়ায়! ভিড়ে পা মচকে পড়ে টনটনে ব্যথা? সেসব মাথায় রেখেই অভিনব উদ্যোগ নিলেন একঝাঁক চিকিৎসক। তাঁদের নয়া উদ্যোগ ‘নিও’। ফোন ঘোরালেই মিলবে চিকিৎসা। একেবারে বিনামূল্যে!
যে উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে চিত্তরঞ্জন সেবাসদনের ডা. অয়ন দাসের বক্তব্য, মাত্র এক ফোন দূরে রয়েছি আমরা। ৮৯১০৭৫০২৬৩ নম্বরে ফোন করলেই মিলবে মুফতে চিকিৎসা। এই টিমে রয়েছেন চিত্তরঞ্জন সেবাসদনের পেডিয়াট্রিক বিভাগের ডা. শ্রেয়া রায়চৌধুরী, ডা. শার্লিন মাতিন, ডা. সুকন্যা জানা, ডা. শ্রেয়া মুখোপাধ্যায়, ডা. মধুরিমা ভৌমিক, ডা. রাহুল ঘোষ, ডা. দিব্য সুমন, ডা. অয়ন দাস, কল্যাণী এইমসের ডা. অন্বেষা দত্ত।
নয়া পরিষেবা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডা. অয়ন দাসের জানান, চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। বিদায় নেয়নি করোনা। তার মধ্যেই উৎসবের আনন্দের জোয়ারে গা ভাসাতে প্রস্তুত সকলে। আনন্দ চলুক, তার সঙ্গে নজর থাকুক স্বাস্থ্যেও। “পুজোর পাঁচদিন আমাদের ওই নম্বরে ফোন করলে ইমার্জেন্সি চিকিৎসা মিলবে”, বলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: প্রথম দেবী দর্শন, কলেজ পড়ুয়াদের উদ্যোগে ‘দুগ্গা’ ঠাকুর দেখল অনাথ শিশুরা]
পুজোয় (Durga Puja 2022) আনন্দের মাঝে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। উৎসবের আবহে নিকট আত্মীয়ের কোনও ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিলে বিপাকে পড়েন অনেকে। চিন্তা একটাই, ইর্মাজেন্সি ভিত্তিক পরিষেবা মিলবে তো? চিকিৎসকরা বলছেন, অসুস্থ হওয়ার প্রথম ৯০ মিনিট হল গোল্ডেন আওয়ার বা মোস্ট অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টাইম। কারণ এই সময় শুধু হার্ট অ্যাটাক নয়, যে কোনও রোগের চিকিৎসা করালেই উপকার পাওয়া যাবে।
এত দিন পর্যন্ত জানা ছিল, দুর্ঘটনাজনিত আঘাত বা হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রেই এই গোল্ডেন আওয়ার-এর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন চিকিৎসকরা বলছেন, স্ট্রোকের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও গোল্ডেন আওয়ার রয়েছে। তা হল প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টা। যে কোনও রোগীকেই সময় মতো আসতে হবে ডাক্তারের কাছে। অসুস্থ হলে চিকিৎসা যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সেই কাজটাই এ পুজোয় করছেন চিত্তরঞ্জন সেবাসদন, কল্যাণী এইমসের একঝাঁক চিকিৎসক। উৎসবের আনন্দের মাঝে হামেশাই চোখে পড়ে সাইরেন বাজিয়ে রুদ্ধশ্বাস গতিতে ছুটে চলেছে অ্যাম্বুল্যান্স। কখনও আবার থিকথিকে ভিড়ের মাঝে অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতর থেকে উঁকি দিচ্ছে অসহায় দু’টি চোখ। সেই চিন্তা অনেকটাই মিটবে এবার।