অভিরূপ দাস: আইপ্যাড দিয়ে অস্ত্রোপচার! তাতেই নাকি সারবে ডায়বেটিস থেকে পায়ের মারাত্মক ঘা। পূর্ব ভারতের কলকাতায় এই প্রথম ডায়বেটিক আলসার সারাতে কাজে লাগানো হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ডাক্তাররা জানান, নতুন প্রক্রিয়ায় দ্রুত হারে সারবে ডায়বেটিক আলসার (Diabetic Ulcers)। পূর্ব ভারতে প্রথম বেলভিউ হাসপাতালে শুরু হল এই প্রক্রিয়া।
কী এই ডায়বেটিক আলসার?
ভারতবর্ষে ডায়বেটিক রোগীর সংখ্যা প্রায় কয়েক লক্ষ। ডায়বেটিক রোগীদের মধ্যে শতকরা প্রায় ১০ জনেরও বেশি মানুষের ‘ডায়বেটিক ফুট আলসার’-এর ঝুঁকি থাকে। পা ঘেমে যাওয়া, লালচে ভাব, পায়ের চামড়া থেকে তরল পদার্থ বেরিয়ে আসা, দুর্গন্ধ বার হওয়া— এমন লক্ষণ দেখা যায়। বেলভিউ হাসপাতালের কসমেটিক প্লাস্টিক সার্জন ডা. রাজন ট্যান্ডন জানিয়েছেন, ডায়বেটিসে আক্রান্ত হলে বেড়ে যায় রক্তে শর্করার মাত্রা। দীর্ঘদিন ধরে তা বেশি থাকলে স্নায়ুকোষ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। চিকিৎসা পরিভাষায় এটা নিউরোপ্যাথি।
[আরও পড়ুন: ক্রস কানেকশন, একে অপরের স্বামীকে কিডনি দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন দুই স্ত্রী]
৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে পায়ের আলসারের নেপথ্যে রয়েছে এই ‘ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি’। সাধারণ প্রক্রিয়ায় তা সাড়তে ১২ থেকে চোদ্দ সপ্তাহ সময় লেগে যায়। ঠিকমতো সারেও না। চিকিৎসকদের দাবি, নতুন প্রক্রিয়ায় যেহেতু হাসপাতালে কম থাকতে হচ্ছে। তাই খরচও বাঁচবে।
সাধারণত ডায়বেটিক আলসার দেখা দিলে হাঁটুর তলার অংশে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে না। তাই সাধারণ অস্ত্রোপচার করে এই ধরনের ঘা সারিয়ে তোলা খুবই কঠিন। নতুন প্রক্রিয়ায় প্রথমে ক্ষতস্থানের একটি 3D ইমেজ নেওয়া হয়। এরপর বায়োপ্রিন্টে তার একটা স্ক্যাফোল্ড বা ধাঁচা তৈরি করা হয়। এরপর বায়োমার্কার দিয়ে ন্যানো ফ্যাট তৈরি করা হয়। সবশেষে বায়োপ্যাচটাকে ক্ষতস্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটাই হয় আইপ্যাডে। আর তার মধ্যেই রয়েছে সফটওয়্যারটি। যা ওয়াইফাই দিয়ে বায়োপ্রিন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকে।