shono
Advertisement

যখন তখন পেট জ্বালা? বড় কোনও রোগের লক্ষণ নয় তো! জেনে নিন চিকিৎসকের মত

একটু সচেতন হলেই সহজে হবে সমস্যার সমাধান।
Posted: 05:53 PM Aug 02, 2022Updated: 05:53 PM Aug 02, 2022

পেটে জ্বালার সমস‌্যা বদহজম, গ‌্যাসট্রাইটিসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই অস্বস্তি হয় না, এমন মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা। সাধারণভাবে সমস‌্যাটি স্থায়ী হয় না। কিন্তু যদি হয়, যদি এক সপ্তাহ বা বেশি সময় ধরে গ‌্যাস্ট্রাইটিস, পেট জ্বালায় কেউ ভোগেন, সত্বর চিকিৎসকের দ্বারস্থ হোন। বারংবার পেটে এই অস্বস্তি! সাবধান হন। আলসার থেকে ক্যানসার সবই হতে পারে। সমস্যাটা গভীরে। জানাচ্ছেন রুবি জেনারেল হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. সুনীলবরন দাস চক্রবর্তী শুনলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়

Advertisement

জ্বালা কেন হয়?
পেট জ্বালা তখনই করে, যখন পেটে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। খুব ঝাল, মশলাদার খাবার খেলে পেট জ্বালা করে। কারণ তখন অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে উদর এবং ডিওডিনাম অংশে প্রদাহ হয়। এছাড়াও দীর্ঘ সময় উপবাসের পর জ্বালা বোধ হতে পারে।

ব‌্যধির উৎস কী?

ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন: অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামে ব‌্যাকটিরিয়ার সংক্রমণে পেট জ্বালা করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ থেকে গ‌্যাসট্রাইটিসের সমস‌্যা হতে পারে বা হতে পারে আপার গ্যাসট্রোইনটেস্টিনাল ডিজঅর্ডার থেকে।

পেনকিলার আসক্তি : মুঠো মুঠো ‘পেনকিলার’ যাঁরা খান, তাঁদের ক্ষেত্রে খুব ‘কমন’ সমস‌্যা পেটে জ্বালা। ‘পেনরিলিভার’ বা ‘পেনকিলার’গুলি পরিচিত নন–স্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস নামে (এনএসএআইডিএস)। এগুলির অতি-মাত্রায় সেবনে অ্যাকিউট গ্যাসট্রাইটিস এবং ক্রনিক গ্যাসট্রাইটিস হতে পারে। নিয়মিত যাঁরা খান, তাঁদের পেটের সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।

বয়স বেড়ে যাওয়া : বয়স্ক ব্যক্তিদের গ্যাসট্রাইটিস হওয়ার বর্ধিত আশঙ্কা থাকে। কারণ তাঁদের ‘স্টমাক লাইনিং’ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পাতলা হয়। তাছাড়াও এঁদের হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অল্পবয়স্কদের তুলনায়
বেশি হয়।

[আরও পড়ুন: ত্বকে কালো দাগ-ছোপ? অবহেলা করলে হতে পারে বিপদ! জেনে নিন চিকিৎসকের পরামর্শ]

অতিরিক্ত মদ্যপান : অ্যালকোহল সেবনে ‘স্টমাক লাইনিং’ ক্ষয়ে যায়। ফলে পেট বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচকগুলির প্রতি অতি-সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত মদ্যপানে অ্যাকিউট গ্যাসট্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

তীব্র মানসিক চাপ : কোনও অস্ত্রোপচার বা চোট-আঘাত বা অগ্নিদগ্ধ হওয়া কিংবা কোনও বড় ধরনের সংক্রমণের পর প্রচণ্ড মানসিক এবং শারীরিক চাপ তৈরি হয়। তার থেকেও অ্যাকিউট গ্যাসট্রাইটিস ও পেট জ্বালা হয়।

পরিত্রাণ পেতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন। যেমন–

১) ‘ট্রিগার’ ফুড যেমন ক্যাফিন, অ্যালকোহল, তেল-মশলাদার খাবার বর্জন করুন। ধূমপান থেকেও দূরে থাকুন।
২) টকজাতীয় খাবার কম খান।
৩) রাতে বেশি দেরিতে খাবার খাবেন না। খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়া ঠিক নয়।
৪) নিয়মিত ব্যবধানে অল্প, অল্প খান। একেবারে বেশি খেয়ে ফেলবেন না
৫) মানসিক চাপ, অবসাদ যতটা সম্ভব কম করুন।
৬) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৭) বেশি করে জল খান।
৮) খুব কষ্ট হলে, নিরাময় পেতে লাইম সোডা খেতে পারেন। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শমতো কোনও লিকুইড অ্যান্টাসিড বা ট্যাবলেট অ্যান্টাসিডও চলতে পারে।

ডাক্তারের দ্বারস্থ কখন

যদি পেট জ্বালার সঙ্গে হার্ট বার্নও হয়।
যদি সমস‌্যা দু’দিনের বেশি সময় ধরে থাকে।
মলের রং কালো হয়।
পেট জ্বালার সঙ্গে সঙ্গে যদি পেটে তীব্র ব্যথাও হয়, নির্দিষ্ট কোনও জায়গায়।
বমি হয়।
হঠাৎ করেই যদি ওজন অনেকটা কমে যায়।
জ্বর আসে।
যদি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, রাত জাগতে হয়।

[আরও পড়ুন: রক্তরোগের শিকড় খুঁজতে দুয়ারে পরীক্ষা, রাজ্যেজুড়ে কর্মসূচি স্বাস্থ্যদপ্তরের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement