সৈকত মাজি, তমলুক: হাটে-বাজারে অনলাইন গেমের রমরমা। লোটো গেমে আকৃষ্ট হয়ে নিত্যদিন লক্ষ লক্ষ টাকা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বহু মানুষ। এমন অবস্থায় সর্বনাশে এই খেলা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবার বেআইনি এই ব্যবসা বন্ধের আর্জি জানিয়ে জেলা পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দারা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলাj হাটে বাজারে অত্যন্ত গোপনে এবং সুকৌশলে চলছে এক অনলাইন গেম। যা লোটো গেম নামে পরিচিত। এমন আধুনিক যুগেও প্রতারকদের নিজস্ব নির্দিষ্ট একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে রমরমিয়ে চলছে এই খেলা। আর তাতেই প্রায় জলের মতো টাকা উড়িয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। সম্প্রতি এই লোটো কাউন্টারের বিরুদ্ধে একাধিক পুলিশি অভিযানে তমলুকের নিকাশি বাজার, নন্দকুমারের খঞ্চি, কোলাঘাট থানার দক্ষিণ সাগরবাড় ও এগরার পানিপারুল সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৬ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় কম্পিউটার সহ বিভিন্ন সামগ্রী। কিন্তু, মাত্র স্বল্প সময়ে বিপুল টাকার প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে এই লোটো কারবার দিন দিন আরও রমরমে চলছে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ‘জানি, আমাকেও নৃশংসভাবে মরতে হবে’, অপরাধ নিয়ে অকপট সুবোধ সিং!]
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না, নন্দকুমারের পাশাপাশি খেজুরি, তালপাটিঘাট কোস্টাল, এগরা, পটাশপুর, ভগবানপুর, কাঁথি ও রামনগর সহ জেলার প্রায় ১১টি থানা এলাকায় ৭০টির বেশি এই অনলাইন লোটোর কাউন্টার রয়েছে। ময়না থানার খেজুরতলা, শ্রীরামপুর পুরনো ঘাটগড়া, বাগের পুল, বলাইপণ্ডা বাসস্টপ এবং অন্নপূর্ণায় রাতদিন লোটো খেলার নামে বসছে জুয়ার কারবার। একইভাবে খেজুরি থানার কলাগেছিয়া, মালদা বাসস্টপ, বিদ্যাপীঠ বাজার, শ্যামপুর থেকে হিজলি যাওয়ার রাস্তার মাঝেও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আরও প্রায় ১০টির বেশি কাউন্টার। এভাবেই কাঁথির রামনগর, দেউলিহাট বাজার, এগরার পানিপারুলে রমরমিয়ে চলছে লোটা কারবার। আর এই কারবারের মূল মাথা হিসেবে রাজেশ সাউ এবং শেখ সাবির নামে দুই ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। নিজস্ব সফটওয়ারে ইংরেজি কোডে গ্রাহকদের ভাগ্য ঝুলিয়ে রেখে দৈনন্দিন কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে চলেছে প্রতারকেরা। এমনই অভিযোগ জানিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অনলাইন লোটো গেমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ধারাবাহিক অভিযানে নেমে একাধিক অভিযুক্ত কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।