রিংকি দাস ভট্টাচার্য: আকাশে মেঘ। বাতাসে জোলো ভাব। উত্তুরে হাওয়া না বইলেও দিনভর মালুম হয়েছে শিরশিরানি। তবে কি মেঘ-বৃষ্টির হাত ধরে বঙ্গে পা রাখল শীত? মানতে নারাজ হাওয়া অফিস। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শীত বহুদূর। সোমবার সারা দিন কার্যত সূর্যের দেখা মেলেনি। তার ফলেই এই শীতল আমেজ। নেহাতই সাময়িক। বরং এই মেঘ-বৃষ্টির দাপটে শীতের রথ হোঁচট খেতে পারে। তবে আলিপুরের হাওয়া অফিস বলছে এই আবহাওয়ার জন্যই আগামী ২ তারিখ পর্যন্ত উত্তুরে হাওয়া বন্ধ থাকবে।
শেষ কার্তিকে এহেন শ্রাবণ দর্শনের পিছনে রয়েছে পশ্চিম-মধ্য সাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত। “আগামী ২৪ ঘণ্টায় মধ্য-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি, অর্থাৎ ওড়িশা উপকূলে যার নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার বিলক্ষণ সম্ভাবনা। এর প্রভাবে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি হবে।” সোমবার বলেন,কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের উপ মহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দে্যাপাধ্যায়। তিনি জানান, নিম্নচাপের ফলে দক্ষিণবঙ্গে আজ মঙ্গলবার বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও আকাশ মেঘলা থাকবে।” আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই নিম্নচাপটির জেরে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
[‘মেরেই ফেলব, লোকজন জানবে চা করতে গিয়ে গায়ে আগুন লেগেছে’]
বস্তুত, হেমন্তের শহর যখন শীতের আঁচ পোহাতে গুছিয়ে বসছে, তখনই এই নিম্নচাপের ধাক্কা। ঝলমলে নীল আকাশের বদলে সোমবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার কলকাতা ও আশপাশের এলাকার। বেলার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকা-সহ কিছু তল্লাটে বৃষ্টিও হয়েছে। রোদের দেখা না মেলায় ঠান্ডা ভাব বজায় ছিল দিনভর। এদিন মেঘের কারণে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চার ডিগ্রি কমে দাঁড়ায় ২৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উলটোদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবার স্বাভাবিকের থেকে এক বেড়ে পৌঁছায় ২৩.৪ ডিগ্রিতে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, বর্ষা বিদায় নিতেই আকাশ সাফ হয়ে যায়। তার জেরে রাতে ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক বেশি তাপ বিকিরিত হতে পারে। ফলে রাতের তাপমাত্রা দ্রুত হারে কমতে থাকে। শীত পড়ার জন্য এই তাপ বিকিরণ গুরুত্বপূর্ণ হলেও নিম্নচাপের জেরে সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাঁদের কথায়, আকাশে মেঘ থাকলে দিনের তাপমাত্রা বাড়বে না। দিন-রাতের তাপমাত্রার তেমন ফারাক থাকবে না, শীত পড়ার জন্য যা নাকি আবশ্যিক শর্ত।
হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, নিম্নচাপটির শক্তি বাড়ানোর সম্ভাবনা কম। তবে নিম্নচাপের জেরে আগামী মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত উত্তুরে হাওয়ার আনাগোনা বন্ধ থাকতে পারে। রাজ্যের সর্বত্র সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপ কাটলে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে সাময়িকভাবে তাপমাত্রায় লাগাম পড়তে পারে। তবে পারদের সেই পতন হবে ক্ষণস্থায়ী। কয়েকদিন পর আবার তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। পাকাপাকিভাবে শীত আসতে এখনও অনেকটা দেরি।
[তৎকাল টিকিট দুর্নীতি চক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেপ্তার ৫২ জন এজেন্ট]
The post দুয়ারে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি, পথ হারাচ্ছে শীত appeared first on Sangbad Pratidin.