সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এবার সেইমতো দেশবাসীর সুরক্ষাবৃদ্ধি এবং সন্ত্রাসদমনে সেনার ৩ বাহিনীকে নিয়ে নতুন পদ – চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) পেল ভারত ৷
জল, স্থল ও বায়ুসেনা বাহিনীর প্রধান এবং বাছাই করা আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি টিম, যার শীর্ষে থাকা পদাধিকারীরাই চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা CDS৷ নয়া পদটি তৈরি হওয়ায় ভারতীয় সেনার কর্মপন্থা আরও মসৃণ হবে৷ আসুন জেনে নিই ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ পদটির বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য৷
কী এই ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ (CDS)?
সহজ কথায়, ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ সরকারের প্রতিরক্ষা ও সামরিক বিষয়ের প্রধান উপদেষ্টা৷ এই পদের অধিকারি সরকার ও সেনার মধ্যে ‘সিঙ্গল পয়েন্ট অফ কন্ট্যাক্ট’ হিসেবে কাজ করবেন৷ ফোর স্টার জেনারেল পদ মর্যাদার হলেও তিন বাহিনীর প্রধানের উপরে থাকবেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী- স্থল, বায়ু ও নৌসেনার মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে অস্ত্র কেনা থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ ও কৌশলগত মোতায়েনের উপর নজর রাখবেন ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ বা CDS৷ বিশেষ করে, আণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায়, পারমাণবিক অস্ত্র তথা হামলা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হবেন CDS৷
CDS পদ তৈরির ভাবনা কি নতুন?
যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ পদ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন, এই প্রস্তাব কিন্তু প্রায় দু’দশক পুরনো৷ কারগিল যুদ্ধের পর সেনাবাহিনীর গঠনে আমূল পরিবর্তন আনতে কে সুব্রহ্মণম কমিটি গঠন করে সরকার৷ সেই কমিটি সিডিএস পদ তৈরির প্রস্তাব দেয়৷ তবে রাজনৈতিক ডামাডোলে তখন ওই প্রস্তাব হিমঘরে চলে যায়৷ এই পদ তৈরির প্রস্তাব জানিয়ে ২০১৬ সালে একটি রিপোর্টও পেশ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি বি শেখাটকর কমিটি৷ তবে সেই প্রস্তাবও কার্যকরী হয়নি৷
CDS নিয়োগের আগে কীভাবে সেনার তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হত?
CDS ঘোষণার আগে পর্যন্ত সেনার তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়টি ছিল ‘চিফ অফ স্টাফস কমিটি’র হাতে৷ এতে রয়েছেন স্থলসেনা, বাযুসেনা ও নৌসেনার তিন প্রধান৷ এদের মধ্য সব থেকে প্রবীণ সদস্যকে কমিটির চেয়ারম্যান বানানো হয়৷ তিনিই বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন৷ বর্তমানে এই পদে রয়েছেন স্থলসেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত৷ তার কার্যকাল মাত্র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে৷ এত স্বল্প মেয়াদ পড়ে থাকার দরুন পরিকাঠামোগত বা নয়া অস্ত্র ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয় না৷ ফলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সিডিএস নিয়োগ হলে এই প্রক্রিয়া মসৃণ হবে৷
কীভাবে ভারতীয় সেনাকে আরও ঘাতক করে তুলবেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ?
আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বিশ্বের তাবড় দেশগুলিতে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রধান৷ ব্রিটিশ সেনার তিন বাহিনীর সমস্ত অভিযান ও কৌশলগত ফৌজ মোতায়েনের বিষয়টি ন্যস্ত থাকে CDS-এর হাতে৷ এর ফলে লাল ফিতের জটে অযথা সময় নষ্ট হয় না৷ কান্দাহার বিমান অপহরণ মামলায় সেনা ও সরকারের আমলাতন্ত্রের জটে পড়ে কার্যত হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছিল কমান্ডোদের৷ CDS পদ তৈরি হলে এহেন জটিল সিদ্ধান্ত নেবেন তিনিই৷ ফলে বাঁচবে সময়৷ সরাসরি তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করার ফলে যৌথভাবে অভিযানের পথ আর মসৃণ হবে৷
[আরও পড়ুন: আরও শক্তিশালী সেনা, বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের]
The post মার্কিন বাহিনীর ধাঁচে প্রথম ‘চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ’ পেল ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.