সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে সোভিয়েত অভিযানের সময় মুজাহিদদের মদত দিত পাকিস্তান। আইএসআইয়ের মদতে আফগান যুদ্ধপতিদের অস্ত্র পৌঁছে দিত মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। কালে কালে তালিবানি শাসকদেরও পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠে দেশটি। তবে সন্ত্রাসের হাওয়া মোরগের গতিবিধি যে এহেন মোড় নেবে তা তারা ভাবতে পারেনি। রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্ট মোতাবেক, পাকিস্তানের জন্য কার্যত ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে তালিবান।
গত শুক্রবার সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এক রিপোর্ট পেশ করে রাষ্ট্রসংঘ। সেখানে সাফ বলে হয়েছে, আল কায়দা এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে যোগ রয়েছে আফগান তালিবানের। তাদের মদত জোগাচ্ছে কাবুলের বর্তমান শাসকরা। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের মাটিতে আল-কায়দার সংগঠন আরও মজবুত হয়েছে। এর পিছনে হাত রয়েছে তালিবানের। তা ছাড়া, সাম্প্রতিক অতীতে পাকিস্তানে টিটিপি যে পরপর হামলা চালায়, তার পিছনেও তালিবানের মদত রয়েছে।
[আরও পড়ুন: বেজিংয়ের হুকুম! সময় একমাস, চিন ছাড়তে হবে শেষ ভারতীয় সাংবাদিককেও]
বলে রাখা ভাল, ক্রমে চওড়া হচ্ছে তালিবান-পাকিস্তান সম্পর্কের ফাটল। মূলত, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) জঙ্গিগোষ্ঠীর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আফগান তালিবানের উপর ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের মাটিতে লাগাতার নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে টিটিপি। ইসলামাবাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সংগঠনটির উপর রাশ টানতে গড়িমসি করছে মুল্লা আখুন্দজাদার সংগঠন। আফগান তালিবানের সাফ কথা, টিটিপি পাকিস্তানের বিষয়। এনিয়ে কাবুলের কিছু করার নেই।
এদিকে, রাষ্ট্রসংঘের দাবি পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে তালিবান। জেহাদি সংগঠনটির এক মুখপাত্র এই বিষয়ে বলেন, রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট একেবারে ‘ভিত্তিহীন এবং পক্ষপাতদুষ্ট’। আফগানিস্তানকে কোণঠাসা করে তালিবান প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতেই এই তোড়জোড়।
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে মরিয়া তালিবান। একইসঙ্গে বিদেশি অর্থসাহায্য পেতে জঙ্গি কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে হবে সংগঠনটিকে। তাই আপাতত পাকিস্তানের জেহাদি এজেন্ডার সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে তালিবান। পাশাপাশি, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পাক বিরোধী তালিবান গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে চরম ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ। সবমিলিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে খারাপ হচ্ছে।